শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা চট্ট-মেট্টো

দুর্বৃত্তরা গরু ডাকাতি করেনি, টাকাও নেয়নি, ট্রাক চালককে হত্যার রহস্য খুঁজছে পুলিশ



নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১৬ জুলাই, ২০২১ ৯:১৫ : অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোডে কোরবানির পশু বহনের একটি ট্রাকের চালককে গুলি করে হত্যা করা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। একটি পিকআপে করে ৭ জন দুর্বৃত্ত এসে গরুবাহী ট্রাকটিকে ব্যারিকেড দেয়। পিকআপ থেকে তিনজন নেমে এসে ট্রাকের সামনে গিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে তিন রাউন্ড ছররা গুলি ছুঁড়ে। এতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন চালক। ট্রাকের পেছনে চালকের শ্যালক ও একজন হেলপার ছিলেন। তাদের কাছে ছিল ব্যাগভর্তি টাকা। কিন্তু দুর্বৃত্তরা তাদের কাউকে আক্রমণ করেনি। এমনকি তারা ট্রাক থেকে গরু ডাকাতি করেনি, টাকাও নেয়নি। চালককে গুলি চালিয়ে হত্যা করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

শুক্রবার (১৬ জুলাই) ভোর ৪টার দিকে ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোডে চার নম্বর ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। কিন্তু চালককে খুনের সমীকরণ মেলাতে পারছে না পুলিশ।

নিহত ট্রাক চালকের নাম আব্দুর রহমান, বয়স ৩৫ বছর। তিনি যশোরের চৌগাছি থানার চন্দ্রা গ্রামের বসির মিয়ার ছেলে।

ট্রাকের পেছনে থাকা হেলপারের মধ্যে একজন গনি নামের একজন ছিলেন আব্দুর রহমানের শ্যালক। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা করেছেন।

সীতাকুণ্ড থানার ওসি আবুল কালাম রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘ট্রাকের চালককে হত্যার পেছনে গরু ডাকাতির উদ্দেশ্যে ছিল বলে মনে হয় না। দুর্বৃত্তরা চালককে হত্যার পর গরু ডাকাতির কোনো চেষ্টাই করেনি। প্রাথমিক তদন্তে আমাদের কাছে এটা একটা রহস্যজনক হত্যাকাণ্ড মনে হচ্ছে।’

সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন কান্তি বণিক রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘আমরা এ খুনের সমীকরণ মেলাতে পারছি না। দুর্বৃত্তরা গরুবাহী ট্রাকটির শুধু চালককে গুলি চালিয়ে হত্যা করে চলে গেছে। অথচ ট্রাকে তখন আরও দুজন লোক ছিল। তাদের কাছে ব্যাগভর্তি টাকাও ছিল। কিন্তু দুর্বৃত্তরা তাদের কাউকে আক্রমণ করেনি। তারা ট্রাক থেকে গরুও নিলো না, টাকাও নিলোও না। তাহলে চালককে হত্যার পেছনে নিশ্চয় কোনো কারণ আছে। আমরা এই হত্যার কারণ উদঘাটনের চেষ্টা করছি।’

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মাগুরা থেকে চট্টগ্রামের বিবিরহাটে ১২টি গরু নিয়ে আসছিলেন এক ব্যাপারী। চাঁদপুর হরিনাঘাট আসার পথে ট্রাকে গাদাগাদি করে রাখায় একটি গরু অসুস্থ হয়ে যায়। তখন ট্রাকটি নোয়াখালীতে এসে চারটি গরু নামিয়ে দেয়। বাকি ৮টি গরু নিয়ে ট্রাকটি চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে চলে যায়। গুলিতে মারা যাওয়া ট্রাক চালক আব্দুর রহমান তখন নড়াইল থেকে চাঁদপুর হরিনাঘাটে একটি গরুর চালান নিয়ে এসেছিলেন। তিনি সেখান থেকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আবুল খায়ের স্টিল মিলে একটা ভাড়ার জন্য আসছিলেন। পথিমধ্যে নোয়াখালীতে এসে বোনাস ট্রিপ হিসেবে তিনি ট্রাকে সেই চারটি গরু তুলে নেন। আব্দুর রহমানের ট্রাকের পেছনে ছিলেন তার শ্যালক গনি ও একজন হেলপার।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ট্রাকটি ভোর চারটার দিকে ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোডে চার নম্বর ব্রিজের কাছাকাছি গেলে পেছন থেকে একটি পিকআপ এসে ব্যারিকেড দেয়। পিকআপে ৭ জন লোক ছিলেন। সেখান থেকে তিনজন নেমে এসে গরুবাহী ট্রাকটির সামনে দাঁড়ান। এরপর একজন পরপর তিন রাউণ্ড গুলি ছুঁড়ে। এতে বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই চালক আব্দুর রহমান মারা যান।

সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন কান্তি বণিক রাজনীতি সংবাদকে জানান, লাশের সুরতহাল রিপোর্টে চালক আব্দুর রহমানের শরীরে তিনটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার লাশটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর