নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১৪ জুলাই, ২০২১ ৫:৪৫ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে জরুরী রোগী ছাড়া সাধারণ রোগীদের ভর্তি ও অপারশেন সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী, ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর।
জানা গেছে, চমেক হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার নতুন রোগী ভর্তি হন। প্রতিদিন গড়ে ৫০০ জন রোগীকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে আড়াই থেকে তিন হাজার রোগী ভর্তি থাকেন। হাসপাতালে প্রত্যেক রোগীর সাথে ১-২ জন স্বজন থাকেন। এতে হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে অন্তত পাঁচ হাজার মানুষের সমাগম থাকে।
এ হাসপাতালটিতে ৩০০ শয্যার পৃথক একটি করোনা ওয়ার্ড রয়েছে।
হাসপাতালের কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হতে আসা রোগীদের কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী, স্বজন এবং ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ পর্যন্ত চমেক হাসপাতালের শতাধিক চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালের কর্তব্যরত তিনজন চিকিৎসক মারাও গেছেন। এ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী, স্বজন, ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে সাধারণ রোগীদের ভর্তি ও অপারশেন কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর রাজনীতি সংবাদকে বলেন, চট্টগ্রামে দিন দিন করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিন অসংখ্যা করোনা আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভিড় করছে। এ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী, স্বজন, ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে আমরা সাময়িক এই পদক্ষেপ নিয়েছি।
তিনি বলেন, হাসপাতালে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে আমাদের রোগী ভর্তির এমন সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দেশের অন্যান্য সরকারী হাসপাতালেও মন্ত্রণালয় এই পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
প্রশ্নের জবাবে হাসপাতাল পরিচালক বলেন, হাসপাতালে রোগী ভর্তি ও অপারেশন একেবারে বন্ধ নয়। জরুরী রোগীদের ভর্তি ও অপারেশন করা হচ্ছে। কেবল সাধারণ অসুস্থ রোগীদের আমরা আপাতত ভর্তি নিচ্ছি না। কেননা এই পরিস্থিতিতে সাধারণ অসুস্থ রোগীদের চেয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দেওয়াটা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
জানা গেছে, চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৬ জন চিকিৎসক মারা গেছেন। এ ছাড়া হাজারখানেক চিকিৎসক-নার্স আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের অনেকে এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এসব চিকিৎসক ও নার্সরা করোনায় সংক্রমিত রোগীদের হাসপাতালে সেবা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন।