শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাশ



নিজস্ব প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১২ জুলাই, ২০২১ ১১:৫৫ : অপরাহ্ণ

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর ভয়াবহ নৃশংসতার জবাবদিহি নিশ্চিত এবং বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের দ্রুত রাখাইনে প্রত্যাবাসন নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে একটি প্রস্তাব পাশ করা হয়েছে। সোমবার (১২ জুলাই) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৪৭তম অধিবেশনে ভোটাভুটি ছাড়া প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

জেনেভায় জাতিসংঘ বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন আজ সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের পর বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় এই প্রথম কোনো প্রস্তাব বিনা ভোটে জাতিসংঘে গৃহীত হলো। সেই বিবেচনায় এবারের প্রস্তাবটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় মাইলফলক।

মানবাধিকার পরিষদের চলমান অধিবেশনে বাংলাদেশের উদ্যোগে ইসলামিক সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) সকল সদস্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ‘রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক প্রস্তাব পেশ করা হয়।

মিয়ানমারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে শুরু থেকেই প্রস্তাবের বিভিন্ন বিষয়ে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে প্রবল মতভেদ দেখা যায়। ২০১৭ সালে যখন রোহিঙ্গাদের ওপর চরম নির্যাতন চলছিল, তখনও রোহিঙ্গাদের পক্ষে জাতিসংঘে কোনো রেজুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়নি। অবশেষে, নিবিড় ও সুদীর্ঘ আপস-আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি সোমবার জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হলো।

প্রস্তাবটিতে বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়। এছাড়া তাদের মিয়ানমারে ফেরত যাওয়া পর্যন্ত এ গুরুভার বহনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখার আহবান জানানো হয়।

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত

প্রস্তাবটির ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জেনেভায় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘মানবিক বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্মম নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের সীমানা উন্মুক্ত করে দেন। তবে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে গত চার বছরেও মিয়ানমারের অসহযোগিতা ও অনীহার কারণে অদ্যাবধি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করা সম্ভব হয়নি।’

রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে নিজেদের আবাসস্থলে ফেরত পাঠানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দৃশ্যমান ও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের আলোচ্য সূচিতে রোহিঙ্গা সংকট সমাধান ও রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার সুরক্ষার বিষয়টি সক্রিয় আলোচনায় রাখা প্রয়োজন। কেবল মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বিশ্ব সম্প্রদায়ের রোহিঙ্গাদের প্রতি মনোযোগ হারানো উচিত হবে না।’

এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূত মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সব পক্ষকে একমত করানোর জন্য প্রথম থেকেই সব স্থরে সব ধরনের চেষ্টা করেছি। অবশেষে কোনও রাষ্ট্রই এই রেজুলেশনের বিরোধিতা করেনি, যেটি বাংলাদেশের কূটনীতির একটি বড় অর্জন।’

তিনি বলেন, ‘একদিকে আমরা ওআইসি রাষ্ট্রগুলোকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি, এই রেজুলেশনে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বাস্তবতা থাকতে হবে। অন্যদিকে পশ্চিমা দেশগুলোকে মানবাধিকারের বিষয়গুলোর সঙ্গে একমত হওয়ার অনুরোধ করেছি।’

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর