শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

রোজার ঈদে আমার কথা শুনলে এভাবে করোনা ছড়াতো না: প্রধানমন্ত্রী



নিজস্ব প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৩ জুলাই, ২০২১ ৫:১৬ : অপরাহ্ণ

গত রোজার ঈদের কথা স্মরণ করিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একটা সমস্যা হচ্ছে যে, জনগণকে গত ঈদুল ফিতরে বারবার অনুরোধ করলাম যে, আপনারা আপনাদের জায়গা ছেড়ে যাবেন না। কিন্তু অনেকেই তো সেই কথা শোনেনি। সবাই ছুটে চলে গেছে। আর তার ফলাফলটা কী হলো? যারা বাইরে ছিল, পুরো বর্ডার এলাকায়, বিভিন্ন জেলায় এই করোনাটা ছড়িয়ে পড়লো। সবাই তখন যদি আমার কথাটা শুনতো, তাহলে আজকে এমনভাবে করোনাটা ছড়িয়ে পড়তো না।’

আজ শনিবার (৩ জুলাই) সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মানুষের বাড়ি যেতে চাওয়ার প্রবণতাকে সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে সংক্রমণ এড়াতে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারী প্রতিরোধে সরকার যেসব নির্দেশনাগুলো দিয়েছে, সেগুলো মেনে চললে মহামারী নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। আমরা এখন লকডাউন ঘোষণা করেছি। আমি দেশবাসীকে বলবো, আপনারা অন্ততপক্ষে নির্দেশনাগুলো মেনে নিজেকে সুরক্ষিত রাখেন, অন্যকে সুরক্ষিত রাখেন। অন্তত এটা ছাড়াতে দিয়েন না।’

গরম পানির ভাপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভাপটা নিলে লাংকে কিছু জমে থাকলে সেটা তাড়াতাড়ি ক্লিয়ার হয়ে যায়। দু-তিনবার করে ভাপ নিলে পরেই, পাঁচ মিনিট করে নিলেও উপকার হয়। আমরা কিন্তু নিই। আমি ঘরে ফিরেই আগে ভাপটা নেবো। গারগলও করতে হবে। তবে গারগল করার সময় বেশি গরম পানি যেন না হয়। কুসুম গরম পানি দিয়ে করতে হবে। নতুবা গলার ক্ষতি হবে। এগুলো করতে পারলেই করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো।’

করোনা সংক্রমণের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবির বিষয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘স্কুল বন্ধ—এ জন্য একটু ক্ষতি হচ্ছে। টিকা দেওয়ার পরে আমরা সব স্কুল খুলে দেব। এর আগে আমরা যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিলাম, তখনই সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারি এমনভাবে ছড়িয়ে পড়লো, তার ধাক্কা এসে পড়ল আমাদের মধ্যে। এখন তো শিশুদেরও করোনা সংক্রমণ হচ্ছে। লেখাপড়া শিখবে, কিন্তু এটার জন্য জেনেশুনে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেব কি না, তা মাননীয় সংসদ উপনেতা একটু বিবেচনা করবেন। বলার জন্য বলতে পারেন, কিন্তু এটাও একটু চিন্তা করুন, ছেলেমেয়েদের মৃত্যুর মুখে দেবেন কি না?’

এর আগে সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানান।

টিকার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টিকা আসতে শুরু করেছে। কোনো অসুবিধা হবে না। সারা বাংলাদেশে টিকা দিয়ে সবাই যেন সুরক্ষিত থাকে, সে ব্যবস্থা আমরা করব। করোনা পরীক্ষাও বিনা মূল্যে করে দিয়েছি। টিকার ক্ষেত্রে প্রবাসী কর্মীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বাজেটে টিকার জন্য পর্যাপ্ত টাকা রাখা হয়েছে। ৩২ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা আমরা বরাদ্দ রেখেছি। এর বাইরেও ১০ হাজার কোটি টাকা রাখা হয়েছে রিজার্ভ।’

লকডাউনে মানুষের পাশে সরকার আছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যে বাজেট দিয়েছি, সেটাতে যেমন জীবন-জীবিকা প্রাধান্য দিয়েছি। কেউ না খেয়ে যাতে কষ্ট না পায়, তার জন্য দরকার হলে ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেবো।’

বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দলটি গণতন্ত্রের কথা বলে। অথচ এর জন্ম সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের পকেট থেকে। তিনি একাধারে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সেনাপতি ছিলেন। এটা একমাত্র খুনি আইয়ুব খান করেছিলেন।’

‘বিএনপি’ শব্দের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে শেখ হাসিনা হেসে বলেন, ‘বিএনপি মানে-বাংলাদেশ না, পাকিস্তান হ্যাঁ। এই তো তাদের দল।’

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর