শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা রাজধানী

এটা প্রাইভেট কোনো সংস্থার কাজ হতে পারে না, বললেন নিখোঁজ আদনানের স্ত্রী



নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১৬ জুন, ২০২১ ৪:৪৫ : অপরাহ্ণ

নিখোঁজ জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানের স্ত্রী সাবিকুন্নাহার বলেছেন, ‘আমি র‍্যাবের ডিজি স্যারের সাথে দেখা করে এসেছি। তিনি জানিয়েছেন যে, আদনান তাদের কাছে নেই। খোঁজ পেলে জানাবে। এ সময় তিনি আমাকে প্রশ্ন করেছেন, ‘আপনি কি মনে করেন তিনি প্রশাসনের কাস্টডিতে আছে?’ আমি বলেছি, ‘না। আমি এমন মনে করে আপনাদের শরণাপন্ন হইনি। আমি তাকে খুঁজে বের করতে পারবেন সে আশা নিয়ে এসেছি। আপনারা চাইলেই অল্প সময়ের ভেতর তাকে খুঁজে বের করতে পারবেন।’

আজ বুধবার (১৬ জুন) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। নিখোঁজ ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান ও তার দুজন সফরসঙ্গী এবং গাড়ি চালকসহ চারজনের সন্ধানের দাবিতে ভুক্তভোগী পরিবারবর্গ ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সাবিকুন্নাহার বলেন, ‘আমার ধারণা, এটা অবশ্যই প্রাইভেট কোনো সংস্থার কাজ হতে পারে না। প্রাইভেটভাবে তাকে গুম করা হয়েছে এমন হতে পারে। প্রশাসন চাইলে তাকে অল্প সময়ের ভেতর খুঁজে বের করতে পারে।’

আবু ত্ব-হা আদনান নিরীহ মানুষ উল্লেখ করে তার স্ত্রী বলেন, ‘কোনো ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকতে পারে। হয় তাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিন, নতুবা আমাকে তার কাছে পৌঁছে দিন। তার ব্যাপারে কথা বলারও কেউ থাকবে না। আমার এই বার্তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিন। উনাকে (আবু ত্বহা আদনান) যেন খুব দ্রুত আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়। আমি আপনাদের কাছে হাত জোড় করে মিনতি করতেছি, আপনারা আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দিন। এর বেশি কিছু চাই না। আমি তাকে অনেক ভালোবাসি।’

আবু ত্বহা আদনানের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা তুলে ধরে সাবিকুন্নাহার বলেন, ‘আমার স্বামী রংপুর থেকে রওনা দিয়েছিলেন বগুড়ার উদ্দেশে। সাথে ফিরোজ ও মুহিত নামে দু’জন ছিলো। ড্রাইভার আমির ড্রাইভ করছিলো। সেখানে তার একটা প্রোগ্রাম ছিল। কোনো কারণে সেই প্রোগ্রাম না হলে তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। পথে মোবাইল ফোনে তিনি আমাকে জানিয়েছিলেন, দুইটি বাইক তাদের বহন করা গাড়িটি অনুসরণ করেছিল। শেষ পর্যন্ত আমাকে তিনি তার গুগল ম্যাপ শেয়ার করেছিলেন, সেখানে আমি জানতে পেরেছি মিরপুরে আমার বাসা থেকে তিনি আর ১৭ মিনিটের দূরুত্বে আছেন। তখন সময় ছিল রাত ২টা ৩৭ মিনিট। পরে ৪টার দিকে তার ফোন বন্ধ পাই। এরপর আমিরের ফোনও বন্ধ পাই।’

সাবিকুন্নাহার বলেন, ‘ঘটনার দিন বিকেলেই আদনানের সন্দেহ হয় কেউ তাকে অনুসরণ করছে।’

ত্ব-হার পরিবারকে আইনি সহায়তা দেওয়া ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসাইন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘একটি গাড়ি ও চার জন মানুষকে এক সঙ্গে এভাবে গায়েব করে দেওয়া কোনো প্রাইভেট সংঘের কাজ নয়। এই ঘটনায় রাষ্ট্র বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি দ্রুত ব্যবস্থা নেয় তাহলে এটা উদ্ধার করা সম্ভব। আমাদের পুলিশ খুবই এফিশিয়েন্ট, তারা বিদ্যুৎ গতিতে ব্যবস্থা নিতে পারে। যেটা পরীমনির ব্যাপারে নিয়েছে। পরীমনি নিজেও স্টেটমেন্ট দিয়েছে। এ ঘটনায় যদি রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন মহলে থেকে নির্দেশনা যায়, তবে এটি মাত্র ঘণ্টার ব্যাপার বলে আমি মনে করি।’

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৯ জুন) রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর গাবতলী এলাকা থেকে দুই সহকর্মী ও গাড়িচালক সহ নিখোঁজ হন আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান। তার মোবাইল ফোনের সর্বশেষ লোকেশন দেখে এই তথ্য নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। সপ্তাহ খানেক পেরিয়ে গেলেও কোনো খোঁজ না মেলায় চরম দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন নিখোঁজ চারজনের পরিবার।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর