নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১২ জুন, ২০২১ ১০:১৩ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রামে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট সাখাওয়াত আলী লালু (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়ে বলেছে, এই ব্যক্তি সিরিয়াফেরত একজন জঙ্গি, যিনি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসাবে কাজ করতেন।
সংস্থাটি দাবি করছে, চার বছর আগে যুদ্ধ করার জন্য বাংলাদেশ থেকে সিরিয়ায় গিয়েছিলেন সাখাওয়াত আলী। গত ২২ মার্চ সাখাওয়াত আলী বাংলাদেশে আসেন। এরপর থেকে তার ওপর নজরদারি করা হচ্ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার (১২ জুন) রাতে খুলশী চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় আহলে হাদিস জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে নোটবুক, ট্যাব, মোবাইল ফোন ও জিহাদি কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।
রাতে খুলশী থানায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। এ মামলায় সাখাওয়াত আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন সিএমপির কাউন্টার টেররিজম বিভাগের এসআই রাছিব খান। আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
আজ শনিবার (১২ জুন) সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। তবে সংস্থাটির কর্মকর্তারা এ নিয়ে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলতে নারাজ।
চট্টগ্রাম কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আহমেদ পিয়ার রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘এ ঘটনার বিষয়ে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলতে উচ্চ পর্যায় থেকে আমাদের নিষেধ করা হয়েছে। তাই এ নিয়ে আমি কোনো কথা বলতে পারবো না।’
সিএমপি কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাখাওয়াত আলী লালু নগরীর খুলশী থানার এম এম আলী রোডের বাসিন্দা শেখ মো. শমসের আলীর ছেলে। নগরীর লালখান বাজার এলাকার অভিজাত লন্ড্রি ‘ওয়াশো ড্রাই ক্লিনার্স’র মালিক তার বাবা।
২০১২ সালে একজন আত্মীয়ের মাধ্যমে জঙ্গি কার্যক্রমে যুক্ত হন সাখাওয়াত। সংগঠনের নেতা চাকরীচ্যুত মেজর জিয়াসহ অন্যদের মাধ্যমে দেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর সদস্যদের সংগঠিত করার লক্ষ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক বিন্যাসে বিভিন্ন প্রকার জিহাদি কার্যক্রম প্রচারের কাজে তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসাবে নিয়োজিত ছিল।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিট জানায়, সাখাওয়াত ২০১৭ সালে জিহাদে অংশগ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ থেকে তুরস্কে যান। তুরস্ক হতে অবৈধ পথে সীমান্ত অতিক্রম করে সিরিয়াতে প্রবেশ করে দীর্ঘ ছয় মাস ভারী অস্ত্রশস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিয়ে সিরিয়ার ইদলিব এলাকায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। পরবর্তীতে সে সিরিয়া হতে অবৈধ পথে সীমান্ত অতিক্রম করে তুরস্কে হয়ে ইন্দোনেশিয়ায় প্রবেশ করেন। এরপর ইন্দোনেশিয়া থেকে শ্রীলংকা গিয়ে, আবার ইন্দোনেশিয়ায় ফিরে এসে বসবাস করতে থাকেন। সেখানেও তিনি জিহাদি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সর্বশেষ ২২ মার্চ তিনি বাংলাদেশে এসে জিহাদি কার্যক্রম শুরু করেন।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এই বর্ণনার বিষয়ে গ্রেপ্তারকৃত সাখাওয়াত আলীর পরিবারের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাই নিরপেক্ষভাবে এসব তথ্য যাচাই করাও সম্ভব হয়নি।