বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২২ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা আইন-আদালত

ঝুলে গেল আসলাম চৌধুরীর জামিন


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৬ জুন, ২০২১ ২:৩৪ : অপরাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর জামিন জামিন ঝুলে গেছে আপিল বিভাগে। নাশকতা ও গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগে রাজধানীর কোতোয়ালি ও শাহবাগ থানার দুই মামলায় আসলাম চৌধুরীকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল করতে বলা হয়েছে।

আজ রোববার (৬ জুন) রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। আসলাম চৌধুরীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

এর আগে গত ২ জুন চেম্বার আদালত এই দুই মামলায় বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরীর জামিন বহাল রেখে আপিল বিভাগে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।

গত ৩০ মে রাজধানীর কোতোয়ালী ও শাহবাগ থানায় দায়ের হওয়া নাশকতার দুই মামলায় আসলাম চৌধুরীকে জামিন দিয়েছিলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট। পরে এই জামিনের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

এর আগে অর্থ আত্মসাৎ, চেক প্রতারণা এবং বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা ৭৮টি মামলায় জামিন পেয়ে মুক্তির প্রহর গুনছিলেন আলোচিত বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী। কিন্তু গত ৩ ফেব্রুয়ারি তাকে রাজধানীর কোতোয়ালী ও শাহবাগ থানায় দায়ের হওয়া নাশকতার দুই মামলায় আদালতে শ্যােন অ্যারেস্ট (একটি মামলায় গ্রেফতার থাকা অবস্থায় আরেকটি মামলায় গ্রেপ্তার) দেখানো হয়।

২০১৬ সালের ১৫ মে ঢাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন আসলাম চৌধুরী। পরদিন ফৌজদারি কার্যবিধির (সন্দেহজনক) ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর একই বছরের ২৬ মে আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। মামলায় আসলামের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্টের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ‘বাংলাদেশের সরকার উৎখাত ষড়যন্ত্রের অভিযোগ’ আনা হয়। এই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিন পেয়েছেন।

পরে তার বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সহিংসতার ঘটনায় নাশকতার ১৭টি মামলা হয়। এসব মামলায়ও উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিন পেয়েছেন।

২০১৬ সালের ১৯ জুন আসলাম চৌধুরীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়। পাঁচ মাস আগে তাকে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে আবার কেরানিগঞ্জ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।

গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারাগার থেকে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির প্রার্থী হন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরী। নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিদারুল আলম দুই লাখ ৬৬ হাজার ১১৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। কারাগারে থেকেও আসলাম চৌধুরী ৩০ হাজার ১৪ ভোট পান।

উল্লেখ্য, আসলাম চৌধুরী ২০০২ সালে জিয়া পরিষদের মাধ্যমে বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। তিনি তখন জিয়া পরিষদ, চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে ২০০৭ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। জেলা বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হতে না হতে দুই বছরের মাথায় জেলার সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন তিনি। পাশাপাশি জায়গা করে নেন কেন্দ্রেও, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে। পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল জেলা বিএনপির সভাপতির সিংহাসনে বসেন তিনি। চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি থেকে ২০১৬ সালে তিনি একলাফে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিবের পদে আসীন হন।

রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের আগে এ বিএনপি নেতা বিসিএস ক্যাডারের চাকরি ছেড়ে এফসিএ কোর্স করেন এবং একটি সিমেন্ট কোম্পানির পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর