২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের ‘ভাওতাবাজি পরিষ্কার’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘সরকার বাজেটের নামে জনগণের সঙ্গে ভাওতাবাজি ও প্রতারণা করেছে। বাজেটে করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়নি।’
আজ শুক্রবার (৪ জুন) সকালে দলের পক্ষ থেকে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ’ শিরোনামে প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিপাদ্য শব্দমালার মাঝেই এবারের বাজেটের ভাওতাবাজি পরিষ্কার। কারণ করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের স্বাভাবিক জীবন গত ১৮ মাস ধরে অচল। এর মধ্যে অপরিকল্পিত লকডাউনের নামে শাটডাউনে নিম্ন ও নিম-মধ্যবিত্ত মানুষদের জীবন চূড়ান্তভাবে থমকে গেছে। তাই সুস্পষ্টভাবে মানুষের জীবন-জীবিকার কথা মাথায় না রেখে কেবল অর্থনীতির নানা তত্ত্ব ও বিশাল সংখ্যার আর্থিক উপস্থাপনার মাধ্যমে কার্যত জনগণের সঙ্গে এক ধরনের ভাওতাবাজি করা হয়েছে।’
প্রস্তাবিত বাজেটকে অবাস্তবায়নযোগ্য, কাল্পনিক ও অগ্রহণযোগ্য মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ঘোষিত বাজেটে অপচয়, অব্যবস্থাপনা বন্ধ করে সুশাসন ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ হয়নি। বরং এই সরকারের সময় দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা ও আইনের শাসন এবং জবাবদিহির যে ঘাটতি রয়েছে, তারই প্রতিফলন ঘটেছে বাজেটে। এই বাজেট দেশের মানুষের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা সেটি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এটি গরিব মারার বাজেট।’
‘প্রস্তাবিত বাজেট দুর্নীতির ধারাবাহিকতা রক্ষার বাজেট’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনা অতিমারিকালে এই বাজেট কাগুজে ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রস্তাবিত বাজেটে জনগণকে কোভিডের মহাসংকট থেকে রক্ষার দিকনির্দেশনা নেই। তাই এ বাজেটে জনস্বার্থের কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। বিদেশি ঋণ জনগণের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে পরিশোধ করা হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এবারের বাজেট হচ্ছে জিডিপির মাত্র ১৭.৪৬ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য মূল বাজেট ছিল পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা, যা ছিল জিডিপির ১৭.৯০ শতাংশ। এ হিসাবে বাজেটের প্রকৃত আকার বৃদ্ধির পরিবর্তে সংকুচিত হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।