নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২ জুন, ২০২১ ৫:০১ : অপরাহ্ণ
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অনুবিভাগ জনবলসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তরের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ যে নির্দেশ জারি করেছে তা নির্বাচনের কফিনে সর্বশেষ পেরেক বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
আজ বুধবার (২ জুন) নির্বাচন কমিশনে নিজ দপ্তরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন।
এসময় মাহবুব তালুকদার একটি লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। সরকারি এ সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করে তিনি যখন কথা বলছিলেন তখন তার চোখ ছিল জলে ভেজা।
মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচন কমিশনের এনআইডির কাজে আমি গর্ববোধ করি। দেশের ভোটারদের তথ্য আমাদের কাছে আছে। কী উদ্দেশ্যে এই আত্মঘাতী ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়। এটি সংবিধানের ১১৯ ধারার পরিপন্থী।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে এনআইডি স্থানান্তরের নির্দেশ কমিশনের অঙ্গচ্ছেদের নামান্তর।
মাহবুব তালুকদার বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আমি তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, মন্ত্রিপরিষদের যুগ্ম সচিবের সই করা পত্রে এনআইডি হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় ‘নির্বাচন কমিশন’–এর বদলে ‘সরকার’ শব্দটি প্রতিস্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে এনআইডির বিদ্যমান অবকাঠামো ও জনবল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগে হস্তান্তর করার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে এ ধরনের নির্দেশ প্রদান কতটা যৌক্তিক, তা বিবেচ্য।
মাহবুব তালুকদার বলেন, ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্র অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। এর ফলে নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেইসনির্ভর ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণে জটিলতার সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া এতে নির্বাচন ব্যবস্থা ও কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র ভূলণ্ঠিত হবে। এটি করা হলে সংবিধানের ১১৯ ধারা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালন সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, স্থানান্তরের বিষয়টি আগে কমিশনকে না জানানো নির্বাচন কমিশনের প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশের শামিল। নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে এমন ঘোরতর দুর্দিন আর আসেনি।