নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৩০ মে, ২০২১ ৭:২০ : অপরাহ্ণ
রাজধানীর কোতোয়ালী ও শাহবাগ থানায় দায়ের হওয়া নাশকতার দুই মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত ২৪ মে এই দুই মামলার জামিন শুনানি হয়েছিল।
আজ রোববার (৩০ মে) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানির আদেশ দেন।
এর আগে অর্থ আত্মসাৎ, চেক প্রতারণা এবং বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মোট ৭৮টি মামলায় জামিন পেয়ে মুক্তির প্রহর গুনছিলেন আলোচিত বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী। কিন্তু গত ৩ ফেব্রুয়ারি তাকে রাজধানীর কোতোয়ালী ও শাহবাগ থানায় দায়ের হওয়া নাশকতার দুই মামলায় আদালতে শ্যােন অ্যারেস্ট (একটি মামলায় গ্রেফতার থাকা অবস্থায় আরেকটি মামলায় গ্রেপ্তার) দেখানো হয়। তিনি এখন কেরানিগঞ্জ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
গত পাঁচ বছর ধরে কারাবন্দি আসলাম চৌধুরী সর্বশেষ দুই মামলায় জামিন পেলেও তার মুক্তি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছে দল ও পরিবার।
তার পরিবারের সদস্য ও বিএনপি নেতারা আশঙ্কা করছেন, আসলাম চৌধুরী জামিন পেলেও তার মুক্তির বিষয়টা নির্ভর করছে সরকারের ওপর। তাকে আবার অন্য কোনো মামলায় শ্যােন অ্যারেস্ট দেখানো হতে পারে।
আসলাম চৌধুরীর ভাই ইসহাক কাদের চৌধুরী রাজনীতি সংবাদকে বলেন, তিনি (আসলাম চৌধুরী) তো এ পর্যন্ত ৮০টা মামলায় জামিন পেয়েছেন। কিন্তু মুক্তি তো পাচ্ছেন না। একটা মামলায় জামিন পেলে আরেকটা মামলায় শ্যােন অ্যারেস্ট দেখানো হয়। সরকার চাইলে তিনি মুক্তি পাবেন, না হয় পাবেন না।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদল নেতা কাজী সালাউদ্দিন রাজনীতি সংবাদকে বলেন, সর্বশেষ দুই মামলায় তিনি জামিন পেলেও মুক্তি পাবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তিনি একের পর এক মামলায় জামিন পেয়ে আসছেন। কিন্তু তাকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না।
ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ২০১৬ সালের ১৫ মে ঢাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন আসলাম চৌধুরী। ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সহিংসতার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে নাশকতার ১৭টি মামলা হয়।
২০১৬ সালের ১৯ জুন আসলাম চৌধুরীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়। পাঁচ মাস আগে তাকে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে আবার কেরানিগঞ্জ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারাগার থেকে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির প্রার্থী হন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরী। নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিদারুল আলম দুই লাখ ৬৬ হাজার ১১৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। কারাগারে থেকেও আসলাম চৌধুরী ৩০ হাজার ১৪ ভোট পান।
উল্লেখ্য, আসলাম চৌধুরী ২০০২ সালে জিয়া পরিষদের মাধ্যমে বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। তিনি তখন জিয়া পরিষদ, চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে ২০০৭ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। জেলা বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হতে না হতে দুই বছরের মাথায় জেলার সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন তিনি। পাশাপাশি জায়গা করে নেন কেন্দ্রেও, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে। পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল জেলা বিএনপির সভাপতির সিংহাসনে বসেন তিনি। চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি থেকে ২০১৬ সালে তিনি একলাফে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিবের পদে আসীন হন।
রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের আগে এ বিএনপি নেতা বিসিএস ক্যাডারের চাকরি ছেড়ে এফসিএ কোর্স করেন এবং একটি সিমেন্ট কোম্পানির পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন।