শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ গতিপথ না বদলালে বাংলাদেশে আঘাত হানবে না



নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৪ মে, ২০২১ ১:৪৫ : অপরাহ্ণ

পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি শক্তি সঞ্চয় করে উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এ পরিণত হয়েছে এবং একই এলাকায় অবস্থান করছে।

আজ সোমবার (২৪ মে) সকালে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানাচ্ছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বর্তমান গতিপথ না বদলালে বাংলাদেশে আঘাত হানবে না। তবে এর প্রভাবে সুন্দরবন এলাকায় মাঝারি ধরণের বৃষ্টিপাত হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস থেকে বাংলাদেশ অনেকটা ঝুঁকিমুক্ত।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের গতি-প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে আসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ নাথ বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ২৬ মে উপকূলে আঘাত হানার কথা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি অবশেষে ভারতের বালাসোর এরং দিঘার মধ্যবর্তী অঞ্চলের চান্দিপুর ও বাছাফাল উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ২৭ মে ইয়াসের প্রভাব বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের বেশিরভাগ এলাকাসহ রাজশাহী ও দিনাজপুর পর্যন্ত তাণ্ডব অব্যহত রাখবে।

এই দুর্যোগ গবেষক জানান, সেদিন চন্দ্রগ্রহণ হবে। চন্দ্রগ্রহণের সময় এমনিতেই জোয়ারের উচ্চতা বেশি হয়। এর সঙ্গে মিলিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের জোয়ারের উচ্চতা স্বাভাবিকের তুলনায় ৪-৬ মিটারের বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। উপকূলে আঘাত হানার আগে এই ঘূর্ণিঝড়ের ঘূর্ণীয়মান বাতাসের গতি প্রতি ঘণ্টায় ১২০-১৬০ হতে পারে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে।

ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

গভীর নিম্নচাপ থেকে সোমবার ভোরে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর পূর্বে ঠিক করা তালিকা অনুযায়ী এটির নাম হয় ‘ইয়াস’।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপের তালিকা অনুযায়ী এই নামটি প্রস্তাব করেছিল ওমান। এর অর্থ ‘হতাশা’।

আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, আরো শক্তি সঞ্চয় না করলে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস যে গতিতে এগোচ্ছে তাতে এটাকে সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ই বলা চলে এবং এটি মারাত্মক আকার ধরার সম্ভাবনাও নাই।

ঘূর্ণিঝড় মাঝে মাঝেই গতিপথ পরিবর্তন করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের বর্তমান গতিপথ উড়িষ্যা ও কলকাতার মাঝামাঝি রয়েছে।

গত বছরের মে মাসে বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলে আঘাত হেনেছিল ঘূর্ণিঝড় আম্পান। বাংলাদেশে আম্পানে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিক হিসাবে সাড়ে এগারোশ কোটি টাকা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সরকারি হিসাবে অন্তত ৭২ জন আর বাংলাদেশে অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর