সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা রাজধানী

সন্তানের সামনে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা: ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আরেক আসামি নিহত



নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৩ মে, ২০২১ ১২:১৪ : অপরাহ্ণ

রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীতে সাহিনুদ্দিন (৩৩) খান নামে এক যুবককে হত্যা মামলার আরেক আসামি মো. মনির ডিবি পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।

শনিবার (২২ মে) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পল্লবীর সাগুপ্তা হাউজিং এলাকায় ডিবি পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিনি মারা যান।

দুই দিন আগে এ হত্যা মামলার আরেক আসামি মানিক র‍্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. সাইফুল ইসলাম রাজনীতি সংবাদকে জানান, শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পল্লবী ১২ নম্বর সেক্টরে সাগুপ্তা হাউজিংয়ের সামনে মনিরের সঙ্গে ডিবির মিরপুর বিভাগের একটি জোনাল টিমের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। বন্দুকযুদ্ধে গুরুতর আহত হন মনির। পরে তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সাহিনুদ্দীন হত্যার ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, মনির চাপাতি দিয়ে সাহিনুদ্দিনের ঘাড়ে একের পর এক কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

এই মামলায় লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক সাংসদ ও ও তরীকত ফেডারেশনের সাবেক মহাসচিব এম এ আউয়ালকে গত বৃহষ্পতিবার কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।

গত ১৬ মে ৭ বছরের ছেলেকে নিয়ে মোটরসাইকেলে ঘুরতে বের হন পল্লবী এলাকার যুবক সাহিনুদ্দিন (৩৩) খান। তার পূর্বপরিচিত সুমন ব্যাপারী ও টিটু মোবাইল ফোনে সাহিনুদ্দিনকে পল্লবীর ডি–ব্লকে একটি গ্যারেজের ভেতর ডাকেন জমিজমা নিয়ে বিবাদ মীমাংসার জন্য। সাহিনুদ্দিন সেখানে গেলে সুমন ব্যাপারী লাথি মেরে মোটরসাইকেল থেকে তাকে ফেলে দেন। এরপর ছেলের সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।

পরদিন এ ঘটনায় সাহিনুদ্দিনের মা আকলিমা বেগম বাদী হয়ে সাবেক সাংসদ আউয়ালসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করে পল্লবী থানায় হত্যা মামলা করেন।

এই ঘটনায় জড়িত খুনি হাসান, জহিরুল ইসলাম বাবু ও লক্ষীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি এমএ আউয়ালকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

র‍্যাব বলছে, এ খুনের মূল পরিকল্পনাকারী সাবেক সাংসদ এম এ আউয়াল। তার নির্দেশে স্থানীয় সন্ত্রাসী মনির, মানিক, সুমন ব্যাপারী, হাসানসহ অন্যরা ৫ থেকে ৭ মিনিটের মধ্যে রামদা ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে সাহিনুদ্দিনকে হত্যা করেন। এরপর সুমন মোবাইল ফোনে সাবেক সাংসদ আউয়ালকে জানান, ‘স্যার, ফিনিশ।’ মোবাইল ফোনের কলরেকর্ড পরীক্ষা করে র‍্যাব এ তথ্য পেয়েছে বলে গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সাহিনুদ্দিনের মা আকলিমা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, পল্লবীর ১২ নম্বর সেকশনের বুড়িরটেকে (আলীনগর) তার ও তাদের স্বজনদের ১০ একর জমি রয়েছে। আশপাশের কিছু জমি দখল করে সেখানে হ্যাভেলি প্রোপার্টিজ ডেভেলপার লিমিটেড নামের আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলেন সাবেক সাংসদ আউয়াল।

আকলিমা বেগমের অভিযোগ, তাদের জমি জবরদখলে ব্যর্থ হয়ে আউয়াল ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে সাহিনুদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। তিনি বলেন, গত বছরের নভেম্বরেও সন্ত্রাসীরা সাহিনকে কুপিয়ে আহত করেছিল। সেই ঘটনায় করা মামলায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। উল্টো আউয়ালের দেওয়া মিথ্যা মামলায় সাহিনুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সপ্তাহখানেক আগে সাহিনুদ্দিন জামিনে মুক্তি পান।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর