‘এখন বিচার ব্যবস্থা সরকার কি বলে না বলে তার উপর নির্ভর করে’-এই মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা এই কথা বহুবার বলেছি, যে সরকারের ইঙ্গিতে এখন বিচার ব্যবস্থা চলছে। সরকার পুরোপুরিভাবে এটা নিয়ন্ত্রণ করছে, এটা দলীয়করণ হয়ে গেছে।’
আজ রোববার (২৩ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেই কারণে আজকে এটা (সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের রায়) হচ্ছে, এই কথাটা এজন্য আসছে এবং আপনাদের এটা নিজেদের অনুধাবন করা উচিত-‘ফর এক্সিসট্যান্স অব এ ফ্রি মিডিয়া’। নির্ভয়ে কাজ করার জন্য আপনাদের ঐক্য প্রয়োজন।’
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কার কাছ থেকে নির্দেশ আসে তার জন্য অপেক্ষা করতে করতে আপনি জামিন দিলেন এই শর্তে যে, বিদেশে যেতে পারবে না এবং ৫ হাজার টাকা জামানত। কেন বিদেশ যেতে পারবে না? এই রায় অবশ্যই ফরমায়েসী রায় বলে আমরা মনে করি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কালকে দেখলাম রোজিনার ঘটনায় মধ্যস্থতা করা হচ্ছে। কে মধ্যস্থতা করছেন? আপনাদের ইকবাল সোবহান চৌধুরী সাহেব। তিনি কী করেছিলেন সাংবাদিক সাগর-রুনির হত্যার আন্দোলনের সময়ে? আন্দোলনের কয়েকদিন পরে উনি উপদেষ্টা হয়েছিলেন। তারা যদি আজকে আপনার মধ্যস্থতা করে সরকারের সাথে, যারা একেবারে লেজুড়ভিত্তি করে, তাহলে এর চেয়ে রেজাল্ট কি পাবেন?’
‘বিএনপি গণমাধ্যমের বন্ধু সেজে উসকানি দিচ্ছে’-আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটি মিথ্যা ও মনগড়া। বিএনপি নয়, এই আওয়ামী লীগই সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করেছে।’
চারটি সংসদীয় আসনে আসন্ন উপনির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ায় এবং এই নির্বাচন কমিশনের অযোগ্যতা ও প্রতিটি নির্বাচনে সরকারের নগ্ন হস্তক্ষেপের কারণে লক্ষীপুর-২, সিলেট-৩, ঢাকা-১৪ ও কুমিল্লা-৫ আসনের উপ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘করোনা টিকা সংগ্রহে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। তাদের অদক্ষতার কারণেই তারা ব্যর্থ। মহামারি ও টিকা ব্যবস্থাপনা ব্যর্থতার দায়ে আমরা সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।’
ই-পাসপোর্টে ইসরায়েলে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়টির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘তাহলে কি আল-জাজিরার প্রতিবেদনই সত্য? ইসরায়েলের সঙ্গে নতুন কোনো চুক্তিতে যাচ্ছে সরকার?’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।