নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২০ মে, ২০২১ ১০:১৫ : অপরাহ্ণ
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে সব সময়ই সাংবাদিক নির্যাতন ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন হয় বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এখানে ধারাবাহিকভাবে একের পর এক এই সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন নেমে এসেছে। গণমাধ্যমের ওপর নির্যাতন নেমে এসেছে। সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের দেশ থেকে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। হত্যা পর্যন্ত করা হয়েছে।’
আজ বৃহস্পতিবার (২০ মে) এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি এ অভিযোগ করেন। ‘অবরুদ্ধ গণতন্ত্র, শৃঙ্খলিত গণমাধ্যম, মুক্তির পথ কী?’ শীর্ষক বিএনপির উদ্যোগে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের জামিন বিষয়ে আদেশ পেছানোর সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এতো দিন রাজনীতিবিদদের সঙ্গে যেটা করা হয়েছে, সেই পুরোনো কৌশল এই সাংবাদিকের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রোজিনা ইসলামের পক্ষে সব সাংবাদিক ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন, শুনলাম। এই ঐক্য কতক্ষণ টিকবে? সাগর-রুনি হত্যার পর দু’পক্ষই (সাংবাদিক) তারা একসাথে রাস্তায় নেমেছিলেন। চার-পাঁচ দিনও যায়নি। একজন উপদেষ্টা হয়ে গেলেন সরকারের। আরো কয়েকজনকে হালুয়া-রুটি দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। আমার কথাগুলো… দুঃখিত, আমি স্পষ্ট করে বলছি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা হালুয়া-রুটির সন্ধানে থাকবো, যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা এই ফেভারের সন্ধানে থাকবো, ততক্ষণ পর্যন্ত এই যে রোজিনা ইসলামের মতো সাহসী সাংবাদিক যারা নিজের জীবন বিপন্ন করে আজকে সত্য কথাগুলো তুলে ধরে তাদেরকে রক্ষা করতে পারবে না। এটাই বাস্তবতা।’
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের অনুসন্ধানী ও সাহসী সাংবাদিকতার জন্য তাকে সাদুবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি তাকে বাহবা জানাই। একইসাথে তাকে শ্রদ্ধা করি। তিনি অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে সত্য প্রচার করেছেন ও তার ওপর যে নির্যাতন হয়েছে, এই নির্যাতনের মধ্যেও তিনি নতি স্বীকার করেননি। তিনি বলেছেন যে আমার প্রতি অন্যায় হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দুর্নীতির চিত্র যাতে প্রকাশ না পায় এজন্য গণমাধ্যমের ওপর আঘাত করে চলেছে। আজকে এক দিকে যেমন সংবাদপত্রের ওপর আঘাত আসছে, অন্য দিকে মানুষের অধিকার নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের ওপরও আঘাত আসছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যখন আমাদের লোকজনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়, যখন রিমান্ডে দেয়, যখন মারধর করে, নির্যাতন করে, গুম করে, খুন করে, তখন আমরা দেখি যে অনেক সংবাদমাধ্যমে এ সম্পর্কে নীরব থাকে। কেউ কেউ আবার আপনার ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে এটাকে ডিফেন্ড করে সরকারের ভূমিকাটা কী।’
মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মানবাধিকার সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বক্তব্য দেন।