রাতভর শাহবাগ থানায় আটক রেখে আজ মঙ্গলবার (১৮ মে) সকাল ৮টার দিকে প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনা ইসলামকে আদালতে নেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আরিফুর রহমান সরদার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, রিমান্ড ও জামিনের বিষয়ে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জসিমের আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে গত রাতে ঢাকার শাহবাগ থানায় ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধিতে চুরির অভিযোগে এবং ১৯২৩ সালের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে রাষ্ট্রীয় গোপন নথি সরানো ও অনুমতি না নিয়ে ছবি তোলার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ এনে মামলা করা হয়। এই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে নেয়া হয়েছে।
এরআগে গতকাল স্বাস্থ্য সচিবের পিএস-এর কক্ষে রোজিনা ইসলামকে পাঁচ ঘন্টারও বেশি সময় আটকে রাখা হয়। আটকে রাখার পর রাত আটটার দিকে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাত পৌনে ১২টার দিকে পুলিশ জানায়, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা হয়েছে। তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের পিএস সাইফুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, ‘সচিবালয়ে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তার. কক্ষে ঢুকে রাষ্ট্রীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজ রোজিনা ইসলাম তার ব্যাগে ভরে নেয়ার চেষ্টা করেন এবং মোবাইল দিয়ে ছবি তোলেন। সেই সময় তিনি ধরা পড়েন।’
প্রথম আলোর ব্যবস্থানা সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ বিবিসিকে বলেছেন, ‘আক্রোশ থেকে রোজিনা ইসলামকে আটক করা হয়েছে। সম্প্রতি রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন নিয়োগ, টিকা নিয়ে অব্যবস্থাপনা এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে, যে প্রতিবেদনগুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। সেই আক্রোশ থেকে তাকে সচিবালয়ে ৫ ঘন্টার বেশি আটকে রেখে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
রোজিনা ইসলামকে আটকে রাখার খবর পেয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের যেসব সাংবাদিক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভবনে ঘটনাস্থলে যান। তারা অভিযোগ করে বলেন, রোজিনা ইসলামকে চিকিৎসা দেয়ার কথা বলে সচিবালয় থেকে বের করে এনে সরাসরি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।