রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৭ মে, ২০২১ ৮:৩৩ : অপরাহ্ণ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নারদা ঘুষ কেলেংকারি মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া রাজ্যের সাবেক ও বর্তমান ৪ মন্ত্রীকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন ভারতের কলকাতার বিশেষ সিবিআই আদালত। ৫০ হাজার টাকার বন্ডে তাদের জামিন দেওয়া হয়েছে। আদালতের এই নির্দেশে স্বস্তি এসেছে তৃণমূল শিবিরে। তবে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যেতে পারে সিবিআই।
আজ সোমবার (১৭ মে) সকালে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার (সিবিআই) হাতে গ্রেপ্তার হন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সাবেক মন্ত্রী ও তৃণমূলের প্রবীণ নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং নবনির্বাচিত তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। এছাড়া একই অভিযোগে কলকাতা পৌর করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বর্তমান বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে গ্রেপ্তার করে কলকাতার নিজাম প্যালেস সিবিআই অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।
সোমবার সকালে তাদের গ্রেপ্তারের পর দুপুরে ভার্চুয়াল মাধ্যমে চারজনকে আদালতে পেশ করেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। এরপর গ্রেপ্তারদের জেল হেফাজতে পাঠানোর আবেদন জানান তারা। তখনই আদালত সিবিআইকে কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি করে।
আদালতের প্রশ্ন- তদন্ত শেষ হয়ে গেলে কেন অভিযুক্তদের জেল হেফাজতে পাঠানোর দরকার?
এর সদুত্তর দিতে পারেনি সিবিআই।
গ্রেপ্তারকৃত চার নেতার পক্ষে আদালতে শুনানি করেন তৃণমূল সাংসদ আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। নারদা ঘুষ কেলেংকারিতে বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়কে কেন গ্রেপ্তার করা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বিধানসভার স্পিকারের অনুমতি ছাড়া মন্ত্রী এবং জন প্রতিনিধিদের কীভাবে গ্রেপ্তার করা হলো, আদালতে সেই প্রশ্নও তোলেন কল্যাণ। গ্রেপ্তারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কল্যাণের মন্তব্য, ‘রাজ্যপাল যা করেছেন পিছনের দরজা দিয়ে করেছেন।’ এ সময় তিনি ৪ নেতার জামিনের আবেদন করেন।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও প্রশ্ন রাখেন, এ মামলার তদন্ত শেষে পেশ করা হয় চার্জশিট। তাহলে এখন অভিযুক্তদের কী কারণে জেল হেফাজত দরকার?
সিবিআইয়ের আইনজীবীকে একই প্রশ্ন করেন বিচারকও।
সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃতরা প্রত্যেকেই প্রভাবশালী। তাদের জেল হেফাজতে না রাখলে তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করতে পারে। তাই জেল হেফাজত চেয়েছে তারা।
দিনভর শুনানির পর বিকেলে চার রাজনীতিবিদের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক অনুপম মুখোপাধ্যায়।
চার নেতাকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছুটে যান কলকাতার নিজাম প্যালেস কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই) অফিসে। ওই ৪ জনের গ্রেপ্তারকে ‘বেআইনি’ আখ্যা দেন তিনি। সেই সঙ্গে এ-ও বলেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, তিনিও নিজাম প্যালেস ছাড়বেন না। নিজাম প্যালেসে জড়ো হন বহু তৃণমূল কর্মী-সমর্থকও। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে নিজাম প্যালেসে। সিবিআই অফিস লক্ষ্য করে ভিড় থেকে পাথরও ছোড়া হয়। তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের তোপের মুখে সিবিআই শেষ পর্যন্ত আদালতে ভার্চুয়াল শুনানির আয়োজন করে।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা