নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :৪ মে, ২০২১ ৬:২৩ : অপরাহ্ণ
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে হলে আদালতের অনুমতি নিতে হবে।’
আজ মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারের নাজনীন স্কুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে কর্মহীন অসহায় মানুষের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া যে সাজা ভোগ করছিলেন পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা স্থগিত রেখে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার সুবিধা করে দিয়েছেন। আমরা যতটুক জানি তিনি এখন রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার ইচ্ছা অনুযায়ী চিকিৎসা নিচ্ছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন এ পর্যন্ত আমাদের জানা।’
খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে সরকারের কাছে কোনো আবেদন করা হয়েছে কি না-এমন প্রশ্নের উত্তরে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘তার পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আবেদন করা হয়নি। তিনি (খালেদা জিয়া) যেন দেশে উন্নত চিকিৎসা পান সেই ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রী করে দিয়েছেন।’
খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হলে সরকার কী পদক্ষেপ নেবে, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটি আদালতের বিষয়। প্রধানমন্ত্রী যে ধারায় তার সাজা স্থগিত রেখে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন, এখন আরও কিছু পেতে হলে তাকে আদালতের মাধ্যমে আসতে হবে।’
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার সোমবার বিকেলে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সোমবার রাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে টেলিফোনে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়ার বিষয়ে আলাপ করেন। তারা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার বলে বিএনপি মহাসচিবকে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে সরকারের অন্যান্যদের সঙ্গে আলাপ করে পরবর্তীতে জানানো হবে।
গত ১১ এপ্রিল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার পর থেকে গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন খালেদা জিয়া। ১৪ দিন পর আবার পরীক্ষা করা হলে তখনও তার করোনাভাইরাস ‘পজিটিভ’ আসে।
এরপর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ২৭ এপ্রিল রাতে তাকে এভার কেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। চেস্টের সিটিস্ক্যান ও কয়েকটি পরীক্ষার পর সেই রাতেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
৭৫ বছ বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু পর পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত বছরের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে তাকে ছয় মাসের জন্য সাময়িক মুক্তি দেয়। পরে আরও দুই দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়। মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়া গুলশানে ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তার সঙ্গে বাইরের কারও যোগাযোগ সীমিত।