রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৪ মে, ২০২১ ১:০৬ : পূর্বাহ্ণ
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্রে সংঘর্ষে নিহত শ্রমিকদের আপাতত ৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ ঘটনার তদন্তে কেন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। পাশাপাশি ডিসি ও এসপির নেতৃত্বে গঠন করা দুটি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ৪৫ দিনের মধ্যে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৪ মে) পৃথক দুটি রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
দ্রূত এই অর্থ দিতে এস আলম গ্রূপকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে নিহত শ্রমিকদের পরিবার প্রতি ৩ কোটি এবং আহতদের পরিবার প্রতি ২ কোটি টাকা করে কেন ক্ষতিপূরণ প্রদান নয় তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
এ সময় এস আলমের আইনজীবী আরশাদুর রউফ বলেন, আমরা তো তিন লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিয়েছি। আদালত বলেন, তিন লাখ খুবই সামান্য টাকা। আপাতত আরও দুই লাখ টাকা দিবেন।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ওই ঘটনায় হাইকোর্টে পৃথক দুটি রিট করেন। রিটের পক্ষে আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও সৈয়দা নাসরিন শুনানি করেন।
গত ১৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নে নির্মাণাধীন ১৩২০ মেগাওয়াটের ‘এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টে’ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশের গুলিতে ছয় শ্রমিক মারা যান। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৭ জন শ্রমিক।
ঘটনার পর হাসপাতালে আহত শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, তাদের বেশ কয়েক মাস ধরে নিয়মিত বেতন দেয়া হচ্ছিল না। সেই সঙ্গে তারা বেতন বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন। রমজানে ইফতারের সময় না দেয়ার অভিযোগও করেন তারা। নামাজ, ইফতার ও রোজার ছুটি দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তারা, তাও মানা হচ্ছিল না। এছাড়াও শ্রমিকদের অভিযোগ, সেখানে পানি ও টয়লেটের সংকট রয়েছে। আট ঘণ্টার পরিবর্তে ১০ ঘণ্টা কাজে বাধ্য করা হয়। তাদের সাথে সবসময় খারাপ ব্যবহার করা হয়। এনিয়ে তারা ১১ দফা লিখিত দাবি দিয়েছিল। শুক্রবারও তাদের কাজ করতে হয়। এ নিয়ে শুক্রবার তারা বিক্ষোভ করেন। শনিবার সকালে তারা আবার বিক্ষোভ করলে তা দমনে গুলি চালানো হয়।
শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন, মালিকপক্ষ তাদের ন্যায্য আন্দোলন দমনে পুলিশকে ব্যবহার করেছেন।
চীনের সাথে যৌথ উদ্যোগে দেশের বৃহৎ শিল্প গ্রুপ এস আলমের কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপনের প্রাথমিক কাজ শুরু হয় প্রায় আট বছর আগে। ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের রিরোধিতা করে স্থানীয়রা আন্দোলন করেন। তখন গুলিতে চারজন নিহত হন। কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে স্থানীয়রা শুরু থেকেই পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করে এর বিরোধিতা করে আসছেন।
এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। ২০২২ সাল নাগাদ কেন্দ্রটি উৎপাদনে যাওয়ার কথা।
আরও পড়ুন:
https://rajnitisangbad.com/2021/04/17/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%81%e0%a6%b6%e0%a6%96%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a7%80%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%ac%e0%a7%87%e0%a6%a4%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%87/