রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৬ এপ্রিল, ২০২১ ৭:১২ : অপরাহ্ণ
কুয়েতে বাংলাদেশের লক্ষীপুর-২ আসনের সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম ওরফে কাজী পাপুলের কারাদণ্ডের মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়িয়েছে দেশটির আপিল আদালত। এর আগে তার চার বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। ফলে এখন তার কারাদণ্ডের মেয়াদ মোট সাত বছর। এর বাইরে তাকে ২০ লাখ কুয়েতি দিনার জরিমানা করা হয়েছে।
আজ সোমবার (২৬ এপ্রিল) কুয়েতের পত্রিকা কাবাসের অনলাইন সংস্করণে বলা হয়, শহিদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে কুয়েতে ঘুষ লেনদেন ও মানবপাচারের অভিযোগে একটি মামলা আছে। আরেকটি মামলা আছে অর্থ পাচারের অভিযোগে। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে এর আগেই তাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। আর সোমবার মানব পাচারের অভিযোগে আরো তিন বছরের কারাদণ্ড ও ২০ লাখ কুয়েতি দিনার জরিমানা করা হয়েছে।
অপরদিকে অর্থ পাচারের মামলা এখনও বিচারাধীন। এই মামলার রায় পেতে আরো কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। ধারণা করা হয়, এই মামলায় তার কয়েক বছরের সাজা হতে পারে।
মানবপাচারের মামলায় পাপুল ছাড়াও আরো তিনজনের কারাদণ্ড হয়েছে। তারা হলেন-কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক আন্ডারসেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাজেন আল জারাহ। তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অন্য দু’জন হলেন কুয়েতের সাবেক এমপি সালাহ খুরশিদ এবং কুয়েতের একজন সরকারি কর্মকর্তা। তাদেরকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ মামলা থেকে বর্তমান এমপি সাদুন হামাদকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
মানব ও অর্থ পাচারের অভিযোগে পাপুলকে গত বছরের ৬ জুন রাতে তার কুয়েত সিটির বাসা থেকে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা আটক করে।
তার বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থ পাচার এবং কুয়েতের কর্মকর্তাদের কয়েক মিলিয়ন ডলার ঘুষ দিয়ে বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগ এবং তার সংস্থাকে কাজ পাইয়ে দেওয়াসহ শ্রম ও রেসিডেন্স আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
অনৈতিক অর্থ লেনদেন মামলায় লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পাপুলকে আদালত ১০ লাখ ৯৭ হাজার কুয়েতি দিনার (৫৫ কোটি টাকা) জরিমানাও করেন। পরে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ তার সদস্যপদ বাতিল করে।
উল্লেখ্য, লক্ষ্মীপুর-২ আসন (রায়পুর-লক্ষ্মীপুর সদরের আংশিক) থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন শহিদ ইসলাম পাপুল। কুয়েতে দণ্ডিত হওয়ার পর বাংলাদেশে এমপি পদ হারান তিনি। কুয়েতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে লক্ষ্মীপুরের মানুষ শহিদ ইসলাম পাপুলকে দানবীর হিসেবে জানতেন। এলাকার লোকজন জানান, ১৯৮৯ সালে একটি প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার (শ্রমিকদের তত্ত্বাবধায়ক) হিসেবে চাকরি নিয়ে কুয়েত যান শহিদ। তখন তিনি ছিলেন অনেকটা নিঃস্ব। ১৯৯০ সালে ইরাকের কুয়েত দখলের কারণে তিনি দেশে ফিরে আসেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শহিদ আবার কুয়েতে যান।