রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৮ এপ্রিল, ২০২১ ১২:০০ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গন্ডামারায় নির্মাণাধীন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে পাঁচ শ্রমিক নিহত হওয়ার পর বেতনের দাবিতে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করা হয়েছে। দুই মামলায় ২২ জন শ্রমিকের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত প্রায় সাড়ে ৩ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে বাঁশখালী থানায় পুলিশ ও বিদ্যুৎকেন্দ্র এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টের পক্ষ থেকে মামলা দুটি করা হয়েছে।
বাঁশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম জানান, পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদানের ঘটনায় বাঁশখালী থানার এসআই মো. কামরুজ্জামান বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় দুই হাজার থেকে আড়াই হাজারজনকে আসামি করা হয়েছে।
অপর মামলাটি করা হয়েছে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের পক্ষ থেকে। বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলায় ২৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের চিফ কো-অর্ডিনেটর ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ১ হাজার ৪০ থেকে ১ হাজার ৫০ জনকে আসামি করে মামলাটি করেছেন।
বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নে নির্মাণাধীন ১৩২০ মেগাওয়াটের ‘এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টে’ গতকাল শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে পাঁচ শ্রমিক মারা যান। এ সময় আহত হয়েছেন ১৭ জন শ্রমিক ও তিন পুলিশ সদস্য।
ঘটনার পর হাসপাতালে আহত শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, তাদের বেশ কয়েক মাস ধরে নিয়মিত বেতন দেয়া হচ্ছিল না। সেই সঙ্গে তারা বেতন বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন। রমজানে ইফতারের সময় না দেয়ার অভিযোগও করেন তারা। নামাজ, ইফতার ও রোজার ছুটি দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তারা, তাও মানা হচ্ছিল না। এছাড়াও শ্রমিকদের অভিযোগ, সেখানে পানি ও টয়লেটের সংকট রয়েছে। আট ঘণ্টার পরিবর্তে ১০ ঘণ্টা কাজে বাধ্য করা হয়। তাদের সাথে সবসময় খারাপ ব্যবহার করা হয়। এনিয়ে তারা ১১ দফা লিখিত দাবি দিয়েছিল। শুক্রবারও তাদের কাজ করতে হয়। এ নিয়ে শুক্রবার তারা বিক্ষোভ করেন। শনিবার সকালে তারা আবার বিক্ষোভ করলে তা দমনে গুলি চালানো হয়।
শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন, মালিকপক্ষ তাদের ন্যায্য আন্দোলন দমনে পুলিশকে ব্যবহার করেছেন।
চীনের সাথে যৌথ উদ্যোগে দেশের বৃহৎ শিল্প গ্রুপ এস আলমের কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপনের প্রাথমিক কাজ শুরু হয় প্রায় আট বছর আগে। ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের রিরোধিতা করে স্থানীয়রা আন্দোলন করেন। তখন গুলিতে চারজন নিহত হন। কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে স্থানীয়রা শুরু থেকেই পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করে এর বিরোধিতা করে আসছেন।
এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। ২০২২ সাল নাগাদ কেন্দ্রটি উৎপাদনে যাওয়ার কথা।
আরও পড়ুন:
বাঁশখালীতে বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, পুলিশের গুলিতে নিহত ৫
আরও পড়ুন:
https://rajnitisangbad.com/2021/04/17/%e0%a6%8f%e0%a6%b8-%e0%a6%86%e0%a6%b2%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%97%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a6%b0%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%9a%e0%a7%81/