নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :১৭ এপ্রিল, ২০২১ ৭:০০ : অপরাহ্ণ
৯ বছর আগে ‘নিখোঁজ’ হওয়া সিলেটের বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীকে নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য দিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। আওয়ামী লীগ সরকার নয়, ইলিয়াস আলীকে ‘গুমের’ পেছনে দলের কিছু লোক জড়িত বলে জানিয়েছেন তিনি।
আজ শনিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা এবং সাবেক সাংসদ ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীকে ফিরে পাওয়ার দাবিতে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী সংহতি সম্মেলনী-ঢাকার উদ্যোগে এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) ও তার গাড়ির চালক ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বনানী থেকে নিখোঁজ হন। সরকার তাকে গুম করেছে বলে নানা সময়ে অভিযোগ করেছে বিএনপি। তাকে জীবিত ফিরিয়ে দিতে হয়েছে আন্দোলন। কিন্তু এতদিনেও বিএনপির সেই নেতার কোনো হদিস মেলেনি।
ইলিয়াস আলীর গুম হওয়া প্রসঙ্গে দলের মহাসচিবের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ইলিয়াস গুম হওয়ার আগের রাতে দলীয় অফিসে কোনো এক ব্যক্তির সঙ্গে তার বাগ্বিতণ্ডা হয় মারাত্মক রকমের। ইলিয়াস খুব গালিগালাজ করেছিলেন তাকে। সেই যে পেছন থেকে দংশন করা সাপগুলো, আমার দলে এখনো রয়ে গেছে। যদি এদের দল থেকে বিতাড়িত না করেন, তাহলে কোনো পরিস্থিতিতেই দল সামনে এগোতে পারবে না।’
ইলিয়াস আলীর গুমের খবর ওই দিন রাত দেড়টা থেকে পৌনে দুইটায় পেয়েছিলেন জানিয়ে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস বলেন, ‘গুমের সংবাদ পাওয়ার পর পরিচিত যারা ছিলেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ইলিয়াস আলীকে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং যে পুলিশ কর্তকর্তাদের সামনে তাকে নেওয়া হলো, সেই পুলিশ কর্মকর্তাদের আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এই খবর আপনারা কেউ জানেন না। পুলিশের গাড়িতে যে কজন কর্মকর্তা ছিলেন, তাদের আজও পাওয়া যায়নি। যেমন ইলিয়াস আলীর চালককেও পাওয়া যায়নি। তাহলে এই কাজটা করল কে?’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমি জানি আওয়ামী লীগ সরকার গুম করেনি। তাহলে গুমটা করল কে? এই সরকারের কাছে এটা আমি জানতে চাই। একজন জলজ্যান্ত তাজা রাজনৈতিক নেতা গুম হয়ে গেল দেশের অভ্যন্তর থেকে। আমাদের একজন নেতাকে দেশ থেকে পাচার করে নিয়ে গেল, সালাউদ্দিনকে। আমাদের চৌধুরী আলমকে গুম করে দেওয়া হলো। আমাদের দলের বহু নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। এটা কিন্তু বাংলাদেশকে ধ্বংস করার পূর্ব আলামত।’
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা কিন্তু সামনের লক্ষণ ভালো দেখছি না। ধরে নিলাম এই সরকার গুম করেনি; করল কে? যারা করল তাদের জিজ্ঞাসা করা যায় না? যারা এই গুম করেছে তারা এই দেশের স্বাধীনতা চাইনি, তারা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব থাকতে দেবে না। আমি বারবার বলি নেতৃত্ব শূন্যতা। হিসেব করে দেখেন একটা একটা করে রাজনৈতিক দল শেষ করে দেওয়া হচ্ছে। এখন চলছে হেফাজত। বিএনপির ওপর নির্যাতন তো চলছেই। একটা সময় আওয়ামী লীগকেও শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।’