রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৭ এপ্রিল, ২০২১ ১০:০০ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস. আলম গ্রুপের মালিকানাধীন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে পাঁচ শ্রমিক নিহতের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দেশের ৬৮ বিশিষ্ট নাগরিক। করোনাভাইরাস মহামারির এই দুর্যোগে শ্রমজীবী মানুষের মজুরি না দেয়া শ্রম আইন ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন জানিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘এস আলম গ্রুপের মতো ধনী শিল্পগোষ্ঠী কেন শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেনি?’ শ্রমিকদের মজুরি প্রদানে অবহেলা করার কারণে এস. আলম গ্রুপের সঙ্গে কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সরকারের যে চুক্তি হয়েছে,তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তারা।
আজ শনিবার (১৭ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং দোষী পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘শনিবার সকালে বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত শ্রমিকরা বকেয়া পাওনার দাবিতে সমাবেশ করলে পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। পুলিশের গুলিতে এ পর্যন্ত পাঁচজন শ্রমিক নিহত ও অনেক শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। বকেয়া মজুরির দাবিতে সমাবেশরত নিরীহ শ্রমিকদের ওপর গুলিবর্ষণ একটি গর্হিত অপরাধ ও গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য লজ্জাকর। আমরা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি।’
বাঁশখালি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ঘিরে এর আগে ২০১৬ ও ২০১৭ সালেও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে এবং সেসব ঘটনায় কমপক্ষে মোট ছয় জন নিহত ও শতাধিক আহত হলেও হত্যাকাণ্ডের কোনো সুষ্ঠু বিচার হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধান ও আইন অনুসারে পুলিশ কোনো অবস্থাতেই নিরীহ শ্রমিকদের উপর গুলি চালানোর অনুমতি পেতে পারে না। পুলিশ প্রবিধান ১৯৪৩-এর বিধান অনুসারে নিরাপত্তার জন্য হুমকিমূলক সমাবেশ অন্য কোনোভাবে ছত্রভঙ্গ না করা গেলে সর্বশেষ পন্থা হিসেবে নূন্যতমভাবে শক্তি প্রয়োগের বিধান রয়েছে এবং সেক্ষেত্রে গুলি চালানোর আগে বার বার সাবধান করতে হবে এবং তা চালাতে হবে কাউকে হত্যা করা না বরং সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার উদ্দেশ্য থেকে। আমরা এই আইনি বিধান বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানতে দেখিনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আইন অমান্য করার দায় সাধারণ নাগরিকদের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়।
বিবৃতিতে সই করেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, ব্র্যাকের নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, মানবাধিকার কর্মী হামিদা হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশি কবীর, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারা হোসেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এর প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আলোকচিত্রী শহিদুল আলাম, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সি আর আবরার, আসিফ নজরুল, রোবায়েত ফেরদৌস, প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষা মঞ্চের আহ্বায়ক জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, ব্যঙ্গচিত্র-শিল্পী আহমেদ কবির কিশোর, সাধনার আর্টিস্টিক ডিরেক্টর লুবনা মরিয়ম বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথের ডা. নায়লা জেড খানসহ ৬৮ নাগরিক।
আরও পড়ুন:
https://rajnitisangbad.com/2021/04/17/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%81%e0%a6%b6%e0%a6%96%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a7%80%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%ac%e0%a7%87%e0%a6%a4%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%87/