নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :১৬ এপ্রিল, ২০২১ ৭:০৮ : অপরাহ্ণ
করোনা টেস্ট জালিয়াতিতে জেকেজি’র সাবরিনা ও রিজেন্টের শাহেদ কাণ্ডের পর দ্বিতীয় ঢেউয়ে এবার উঠে এসেছে আরেক ভয়ঙ্কর কেলেঙ্কারির ঘটনা। তিনটি জালিয়াত চক্রের বিপুল পরিমাণ অননুমোদিত মেডিকেল ডিভাইস ও মেয়াদোত্তীর্ণ মেডিকেল টেস্টিং কিট এবং রি-এজেন্ট জব্দ করেছে র্যাব। এসব কিট ও রি-এজেন্ট করোনা, এইডস, ক্যানসার ও ডায়াবেটিস পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করা হতো।
আজ শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে র্যাব-২ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার জানান, বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) রাতে বনানী ও মোহাম্মদপুরের তিনটি প্রতিষ্ঠানে রাতভর অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল, হাইটেক হেলথ কেয়ার ও এক্সন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড। এ সময় তিনটি প্রতিষ্ঠানের মোট নয়জনকে আটক করা হয়েছে।
আটক নয়জন হলেন- বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের স্বত্ত্বাধিকারী মো. শামীম মোল্লা (৪০), ব্যবস্থাপক মো. শহীদুল আলম (৪২), প্রধান প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল বাকী ছাব্বির (২৪), অফিস সহকারী মো. জিয়াউর রহমান (৩৫), হিসাবরক্ষক মো. সুমন (৩৫), অফিস ক্লার্ক ও মার্কেটিং অফিসার জাহিদুল আমিন পুলক (২৭), সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার মো. সোহেল রানা (২৮), এক্সন টেকনোলজিস্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো. মাহমুদুল হাসান (৪০), হাইটেক হেলথ কেয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপক এস এম মোজফা কামাল (৪৮)।
র্যাব সদর দফতরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের জানান, মহামারি করোনা ভাইরাস কিংবা প্রাণঘাতি ক্যান্সার এবং এইডসসহ বিভিন্ন মেডিক্যাল পরীক্ষায় ব্যবহৃত কিট ও রি-এজেন্ট স্বল্পদামে আমদানি করা হতো মেয়াদোত্তীর্ণের কিছুদিন আগে। এরপর এসব কিট ও রি-এজেন্ট দেশে এনে নিজের ইচ্ছে মতো মেয়াদ বসিয়ে বাজারজাত করে আসছিল এই চক্রটি।
জানা গেছে, প্রতারণায় অভিযুক্ত তিনটি প্রতিষ্ঠান ২০১০ সাল থেকে চক্রটি এ ধরনের অপকর্ম চালিয়ে আসছিল। এই তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে কেবল বেসরকারিতে নয়, বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালেও টেস্ট কিটগুলো সরবরাহ করা হতো। দেশে কতোগুলো হাসপাতালে এবং কি পরিমাণে নকল ও মানহীন কিট সরবরাহ করা হয়েছে তা তদন্তে মাঠে নেমেছে র্যাবের ইন্টেলিজেন্স টিম।
র্যাব সূত্র জানিয়েছে, এই তিন জালিয়াত চক্রের কাছ থেকে ইতোমধ্যে একাধিক সরকারি ও বেসরকরি প্রতিষ্ঠান কিট সংগ্রহ করে মানুষের করোনা টেস্ট করেছে। তবে ওই কিটগুলো তারা জেনে নিয়েছে নাকি না জেনে নিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বছর করোনা টেস্ট সংক্রান্ত জালিয়াতির ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো: শাহেদ ওরফে শাহেদ করিম এবং জেকেজি গ্রুপের চেয়ারম্যান সাবরিনা আরিফ।