রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৩ এপ্রিল, ২০২১ ৩:০০ : অপরাহ্ণ
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে সহিংসতার ঘটনায় পল্টন থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় ৮ বছর পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে। কিন্তু ইসলামাবাদী গ্রেপ্তার হলেও সহিংসতার ঘটনার একই মামলার আসামি হেফাজতের অন্য নেতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। তারা প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করলেও পুলিশ তাদের ধরছে না।
জানা গেছে, পল্টন থানার একটি মামলায় ১৫৭ নম্বর আসামি ছিলেন আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
পুলিশের ভাষ্যমতে, রোববার (১১ এপ্রিল) দিবাগত রাত দুইটায় গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার যৌথ অভিযানে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর বালুচর থেকে আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আদালতে দেওয়া প্রতিবেদনে পুলিশ বলেছে, শাপলা চত্বরে ৫ মে সমাবেশ চলাকালে তিনি সরকার উৎখাত করার জন্য বিভিন্ন রকম উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন। তাকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের জন্য রিমান্ড চাইলে বিচারক ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জানা গেছে, শাপলা চত্বরে সহিংসতার ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৫৩টি মামলা দায়ের হয়েছিল। এর মধ্যে পল্টন থানায় সর্বোচ্চ ২৪টি মামলা দায়ের হয়। এসব মামলায় তখন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীসহ (এখন আমির) কয়েকটি সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় ৮৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারা জামিনে মুক্তি পান।
পল্টন থানায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারে জুনাইদ বাবুনগরী ও আজিজুল হক ইসলামাবাদী ছাড়া চট্টগ্রামের আরও ১৫ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এরা হলেন-হেফাজতে ইসলামের সাবেক সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবু নগরী, নায়েবে আমির শামসুল আলম ও তাজুল ইসলাম, সাবেক সহকারী যুগ্ম মহাসচিব মাঈনুদ্দিন রুহি, আল্লামা শাহ আহমদ শফির ছেলে ও হেফাজতের সাবেক প্রচার সম্পাদক আনাস মাদানী, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক মুফতি হারুন ইজাহার, বর্তমান যুগ্ম মহাসচিব নাছির উদ্দিন মুনীর, বর্তমান সহকারী যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মীর ইদ্রিছ, রাঙ্গুনিয়া দারুল হেদায়া মাদ্রাসার পরিচালক আজিজুল হক আল মাদানী, আনোয়ারা কাইলদর কওমি মাদ্রাসার প্রিন্সিপ্যাল আবদুল মালেক হালিম, হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মো. ইয়াহিয়া, কারী ফজলুল করিম জিহাদী এবং মাওলানা হাবিবুল হক বাবু।
একই মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার না করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মো. মাহবুব আলম রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই। আমি বলতে পারবো না।’
৮ বছর পর পল্টন থানার মামলায় এতো আসামির মধ্যে কেবল আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে গ্রেপ্তার করার বিষয়টি ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছেন হেফাজতে ইসলামের নেতারা। এর পেছনে হেফাজতের কমিটি থেকে পদবঞ্চিত আল্লামা শফিপন্থি নেতাদের ইন্ধন থাকতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
হেফাজতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘৮ বছর পর পল্টন থানার মামলায় কেবল একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করার বিষয়টি ষড়যন্ত্রমূলক। এর পেছনে হেফাজতের কমিটি থেকে পদবিঞ্চত সরকারপন্থি নেতাদের ইন্ধন থাকতে পারে। তারাও তো একই মামলার আসামি। কিন্তু তাদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। তারা তো প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছেন।’