রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১২ এপ্রিল, ২০২১ ৬:১৫ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলূম মাদ্রাসার সাবেক প্রধান পরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফিকে হত্যার অভিযোগে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীসহ ৪৩ জনকে অভিযুক্ত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হেফাজতের সাবেক আমির আল্লামা আহমদ শফিকে ‘মানসিক নির্যাতন করে পরিকল্পিতভাবে’ হত্যার অভিযোগে ৩৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়। আহমদ শফির শ্যালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এই মামলা দায়ের করেন।
প্রায় চার মাস পর আজ সোমবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল তৃতীয় জজ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদনটি দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পরিদর্শক মো. মুনির হোসেন।
নরহত্যার দায়ে দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় প্রতিবেদনটি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ আসামিদের বিরুদ্ধে নানা ঘটনা ঘটিয়ে আল্লামা শফিকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে ২২ জনকে স্বাক্ষী করা হয়েছে। তদন্তের সময় ২১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করে পিবিআই।
মামলায় ৩৬ জনের আসামির তালিকায় হাটহাজারী দারুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক জুনায়েদ বাবুনগরীর নাম উল্লেখ নেই। তবে আরজিতে তাকে অভিযুক্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাজনীতি সংবাদে ‘আল্লামা শফি ‘হত্যা মামলায়’ অভিযোগপত্রে আসামি হচ্ছেন জুনায়েদ বাবুনগরী?’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদনে বাবুনগরীকে এই মামলায় অভিযুক্ত করা হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়।
এখন তদন্ত প্রতিবেদনে জুনায়েদ বাবুনগরীকে আসামি করেছে পিবিআই। তবে আসামির তালিকায় থাকা হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে তদন্ত প্রতিবেদনে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে হেফাজতে ইসলামের এক নম্বর যুগ্ম মহাসচিব নাছির উদ্দিন মুনির।
তদন্ত প্রতিবেদনে যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- নাছির উদ্দিন মুনির (৫৫), মীর ইদ্রিস (৫০), হাবিব উল্লাহ আজাদী (৫৫), আহসান উল্লাহ (৪৫), আজিজুল হক ইসলামাবাদী (৪৫), জাকারিয়া নোমান ফয়েজী (৪২), আব্দুল মতিন (২৪), মো. শহীদুল্লাহ (৪০), রিজুয়ান আরমান (৩০), হাসানুজ্জামান (২১), এনামুল হাসান ফারুকী (২২), মীর সাজেদ (২৪), জাফর আহমেদ (৬০), মীর জিয়া উদ্দিন (২৬), আহমদ (২২), মাহমুদ (২৪), আসাদ উল্লাহ (৩০), জুবাইর মাহমুদ (২২), জুনায়েদ আহমেদ (৩০), আনোয়ার শাহ (৩৭), ছাদেক জামিল কামাল (২০), কামরুল ইসলাম কাছেমী (৩২), মো. হাসান (২১), ওবায়দুল্লাহ ওবাইদ (২৫), জুবাইর (২০), মুহাম্মদ (৩৫), আমিনুল হক (৪৫), সোহেল চৌধুরী (৪৩), মবিনুল হক (২১), নাঈমুল ইসলাম খান (২০) এবং সায়েম উল্লাহ (৩৫)।
তদন্তে সম্পৃক্ততা পেয়ে যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- মো. জুনায়েদ প্রকাশ জুনায়েদ বাবুনগরী (৭০), শফিউল আলম (৪৩), শিব্বির আহমেদ (২২), আবু সাঈদ (২৬), হোছাইন আহাম্মদ (২৪), তাওহীদ প্রকাশ তৌহিদ (২৩), এরফান (২২), মো. মামুন (২০), আমিনুল ইসলাম (২৫), মাসুদুর রহমান (৩৫), জাহাঙ্গীর আলম (৪৮) এবং নুর মোহাম্মদ (৪৫)।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার বেসরকারী আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ১০৪ বছর বয়সী আল্লামা আহমদ শফি। এর আগের দিন রাতে তাকে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে মুমূর্ষ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়া হয়েছিল। পরে সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। মামলার আরজিতে সংযুক্ত মৃত্যু সনদের স্ক্যান কপিতে আল্লামা শফি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান বলে উল্লেখ করা হয়।