শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

কাল ‘লকডাউন’ শেষ, ১২ ও ১৩ এপ্রিল কী হবে



নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :১০ এপ্রিল, ২০২১ ৭:২০ : অপরাহ্ণ

সাত দিনের শিথিল ‘লকডাউন’ শেষ হচ্ছে আগামীকাল রোববার। করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় ১৪ এপ্রিল থেকে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কিন্তু মাঝের দুই দিন অর্থাৎ ১২ ও ১৩ এপ্রিল কী হবে? এই দুই দিন কি সারা দেশে গণপরিবহন চলবে? কোনো ক্ষেত্রেই কি বিধিনিষেধ থাকবে না?

জানা গেছে, এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কাল সভা হওয়ার কথা রয়েছে।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এ বিষয়ে আজ একটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ১২ ও ১৩ এপ্রিল কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। আলোচনা সাপেক্ষে আগামীকালের মধ্যেই জানানো হবে। তবে সংক্রমণ যাতে আর না বাড়ে, সেই চেষ্টা চলছে।

সরকার ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা মনে করছেন, যদি ১২ ও ১৩ এপ্রিল সবকিছু স্বাভাবিক থাকে, তাহলে ‘সর্বাত্মক লকডাউনের’ আগে হাজার হাজার মানুষ গ্রামে চলে যাবে। তখন করোনার সংক্রমণ আরও বেড়ে যেতে পারে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিন বাড়তে থাকায় সারা দেশে গত ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে ‘লকডাউন’। তবে সরকারিভাবে সেটিকে চলাচল ও কাজে নিষেধাজ্ঞা বলা হয়েছে। ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত সারাদেশে শপিং মল, দোকান-পাট, হোটেল-রেস্তারাঁসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। শপিংমল ও দোকান বন্ধ রাখার কথা বলা হলেও গার্মেন্ট খোলা রাখা হয়। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নানা আলোচনা সমালোচনার জন্ম দেয়। অফিস খোলা থাকায় লকডাউনের প্রথম দিনই অফিস করতে আসা লোকজনকে বিপাকে পড়তে হয়। এ নিয়ে সমালোচনার কমতি ছিল না। ফলে বুধবার থেকে সিটি করপোরেশন এলাকায় সকাল-সন্ধ্যা গণপরিবহন সেবা চালুর অনুমতি দেয় সরকার। এরপর শুক্রবার থেকে শপিংমল ও দোকানপাটও খোলার অনুমতি দেয় সরকার।

এখন দূরপাল্লার গণপরিবহন ছাড়া প্রায় সবকিছুই চলছে। সিটি করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন যেমন চলছে, তেমনি দোকানপাট এবং শপিংমলও সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত খোলা রাখা যাচ্ছে। শিল্পকলকারখানা এবং সরকারি-বেসরকারি অফিসও খোলা।

আজ শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে রেকর্ডসংখ্যক ৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৩৪৩ জন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, করোনা আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হতে এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে। বর্তমান করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। তখন করোনায় আক্রান্ত বহু লোককেই ন্যূনতম চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব না-ও হতে পারে।

এ রকম পরিস্থিতিতে গতকাল শুক্রবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশে করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। সঙ্গে বাড়ছে জনগণের অবহেলা ও উদাসীনতা। এমতাবস্থায় সরকার জনস্বার্থে ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়ে সক্রিয় চিন্তাভাবনা করছে।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ বলতে যে চিন্তাটি করা হয়েছে সেটা হলো, শুধু জরুরি সেবা ছাড়া আর কোনো কিছুই চলবে না। এখন যেমন কিছু কিছু বিষয়ে নমনীয়তা দেখানো হচ্ছে, সেটি হয়তো তখন আর করা হবে না।

কিন্তু ১২ ও ১৩ এপ্রিল কী হবে, সেটিই এখন সবার ভাবনার বিষয়।

সরকার এক সপ্তাহের লকডাউনের কথা বললেও কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশ, অন্তত দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউন ছাড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এ জন্য কমিটি সিটি করপোরেশন ও পৌর এলাকায় দুই সপ্তাহের পূর্ণ লকডাউন দেওয়ার সুপারিশ করেছে।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর