শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

১৪ এপ্রিল থেকে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ কেমন হবে?



নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :৯ এপ্রিল, ২০২১ ৪:০১ : অপরাহ্ণ

আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউন দিচ্ছে সরকার। দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এবং জনগণের অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে এমন কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন আজ (৯ এপ্রিল) গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। করোনার ঊর্ধ্বগতি ঠেকানোর জন্য এর কোনো বিকল্প নেই জানিয়ে তিনি বলেছেন, দেশের জনস্বাস্থ্যবিদেরাও এই পরামর্শ দিয়েছেন।

জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, বর্তমানে চলমান লকডাউন আর সর্বাত্মক লকডাউনের মধ্যে পার্থক্য কী হবে? এখন যেভাবে লকডাউন চলছে, সর্বাত্মক লকডাউনের সময়ও কি একই পরিস্থিতি থাকবে? নাকি নিষেধাজ্ঞার আওতা আরও বাড়বে?

সর্বাত্মক লকডাউনে জরুরি সেবা ছাড়া কিছুই চলবে না বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, সর্বাত্মক লকডাউন বলতে যে চিন্তাটি করা হয়েছে সেটা হলো শুধু জরুরি সেবা ছাড়া আর কোনো কিছুই চলবে না। এখন যেমন কিছু কিছু বিষয়ে নমনীয়তা দেখানো হচ্ছে, সেটি তখন আর করা হবে না।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে যে লকডাউন চলছে সেখানে সব ধরনের গণপরিবহন চলছে। বাজার, শপিং মল খোলা হয়েছে। অফিস–আদালত, ব্যাংক, বিমা সবকিছুই খোলা। বেসরকারি খাতের সবকিছুই খোলা। খোলা রয়েছে শিল্পকলকারখানা। তখন সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। সকল শিল্পকলকারখানা বন্ধ থাকবে। অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া সকল গণপরিবহনও বন্ধ থাকবে।

তবে ওষুধের দোকান, নিত্যপণ্যের দোকান জরুরি সেবার মধ্যেই পড়ে। তাই এগুলো সর্বাত্মক লকডাউনেও খোলা রাখা হবে।

তবে নিত্যপণ্যের দোকান খোলা রাখার জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হতে পারে। আর সরকারের অন্যান্য জরুরি সেবা হলো বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন, স্বাস্থ্য, ত্রাণ বিতরণ, স্থলবন্দর, ইন্টারনেট, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আনা–নেওয়া ও এর সঙ্গে জড়িত অফিসগুলো।

এর আগে সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণ এক ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার, সঙ্গে বাড়ছে জনগণের অবহেলা ও উদাসীনতা। এমতাবস্থায় চলমান এক সপ্তাহের লকডাউনে জনগণের উদাসীন মানসিকতার কোন পরিবর্তন না হওয়ায়, সরকার জনস্বার্থে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়ে সক্রিয় চিন্তা-ভাবনা করছে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিন বাড়তে থাকায় গত ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত সারাদেশে শপিং মল, দোকান-পাট, হোটেল-রেস্তারাঁসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। শপিংমল ও দোকান বন্ধ রাখার কথা বলা হলেও গার্মেন্ট খোলা রাখা হয়। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নানা আলোচনা সমালোচনার জন্ম দেয়। অফিস খোলা থাকায় লকডাউনের প্রথম দিনই অফিস করতে আসা লোকজনকে বিপাকে পড়তে হয়। এ নিয়ে সমালোচনার কমতি ছিল না। ফলে বুধবার থেকে সিটি করপোরেশন এলাকায় সকাল-সন্ধ্যা গণপরিবহন সেবা চালুর অনুমতি দেয় সরকার। এরপর গতকাল শপিংমল ও দোকানপাটও খোলার অনুমতি দেয় সরকার। ফলে চলতি লকডাউন অনেকটা লক খোলা অবস্থায় পতিত হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেন।

দুই সপ্তাহ ‘কঠোর লকডাউনের’ সুপারিশ
সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা এলাকায় দুই সপ্তাহ পূর্ণ লকডাউনের সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে পরামর্শক কমিটি। গত বুধবার রাতে কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৩০তম সভায় এমন কথা উঠে আসে।

কমিটির সুপারিশ বলা হয়েছে, অন্তত দুই সপ্তাহের জন্য পূর্ণ লকডাউন ছাড়া করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। বিশেষ করে সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভা এলাকায় দুই সপ্তাহ পূর্ণ লকডাউন রাখতে হবে। দুই সপ্তাহ পর সংক্রমণ হার বিবেচনা করে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর