নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশের সময় :৯ এপ্রিল, ২০২১ ৬:৪০ : অপরাহ্ণ
অযথা বিএনপির সমালোচনায় সময় নষ্ট না করে সরকারকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, ‘দেশে গত ৫ জানুয়ারি করোনার নতুন স্ট্রেইন ধরা পড়লেও তা গোপন রাখা হয়। সরকার তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে সময়ক্ষেপণ করে এবং সংক্রমণের বাস্তবচিত্র গোপন করে।’
আজ শুক্রবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইনে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে করোনা শনাক্ত এবং মহামারী আকারে সংক্রমণের পর সারা বিশ্বের জনবান্ধব রাষ্ট্রগুলো যখন সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে শুরু করে, বাংলাদেশের সরকার তখন স্বভাবসুলভ বলতে শুরু করে, ‘আমরা করোনার চেয়ে শক্তিশালী। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সে দেশে করোনা কিছুই করতে পারবে না।’-এসব উন্মাদীয় বক্তব্য দিয়ে তারা জনগণের সাথে প্রতারণা শুরু করে এবং করোনা প্রতিরোধে সামান্যতম উদ্যোগ গ্রহণ না করে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে বিভোর থাকে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে যখন বিমান চলাচল সীমিত এবং যাত্রী প্রবেশে কঠোর কড়াকড়ি আরোপ করলো, বাংলাদেশ তখনও এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন ও নির্বিকার থাকলো। করোনাক্রান্ত দেশ চীন, ইতালি, স্পেন মধ্যপাচ্য থেকে প্রচুর প্রবাসী কর্মহীন হয়ে পড়ায় কিংবা নাড়ীর টানে দেশে ফিরে আসে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে হৈচৈ শুরু হলে তারা বললো, করোনা প্রতিরোধে বিমানবন্দরে পর্যাপ্ত থার্মাল স্ক্যানার বসানো হয়েছে। অথচ দেখা গেলো ১টি ছাড়া সবগুলো থার্মাল স্ক্যানারই নষ্ট। অনেকটা যথাযথ করোনা পরীক্ষা ছাড়াই বিদেশ থেকে বিশেষ করে করোনা সংক্রমণ দেশ থেকে আসা প্রায় ৬.৫ লক্ষ প্রবাসী দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে।’
করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের সমন্বয়হীনতার অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শুরু থেকেই করোনা সংক্রমণ রোধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় জাতীয় পরামর্শক কমিটি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও নীতি নির্ধারকদের মধ্যে কোন সমন্বয় ছিল না। পরামর্শক কমিটির সিদ্ধান্ত মানা হয়নি। সরকারি সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানেন না। লকডাউন না করে সাধারণ ছুটি ঘোষণা হয়। পোশাক শিল্পকারখানা খোলার সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় অবগত নয়। কোভিড-নন কোভিড হাসপাতাল নির্ধারণ, চিকিৎসকগণ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান ইত্যাদি কার্যক্রম ছিলো চরম হতাশাব্যঞ্জক। কার্যকর লকডাউন, দ্রুত বেশি সংখ্যক পরীক্ষা, কন্টাক্ট ট্রেসিং ও চিকিৎসার পরিধি বাড়ানোর মাধ্যমে পরিক্ষিত উত্তরণ সম্ভব ছিলো- কিন্তু তা করা হয়নি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জাতির এই চরম দুর্যোগপূর্ণ সময়ে আমরা জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছিলাম। কোটি কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম খাত আরএমজি সেক্টরে কয়েক হাজার গামেন্টস বন্ধ হয়েছে। ৪০ লক্ষ শ্রমিকের জীবন জীবিকা আবার অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যেই দশ লক্ষ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছে। অর্থের অভাবে ঢাকা ছাড়ছে শত শত পরিবার। তাই সরকারের প্রতি আমাদের আবারও আহ্বান, আসুন আমরা জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে এ সংকট মোকাবেলায় উদ্যোগী হই।’