রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১ এপ্রিল, ২০২১ ১:৪৫ : অপরাহ্ণ
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আনতে জনগণের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হঠাৎ করে আবার বেড়ে যাওয়ায় বিয়েশাদির অনুষ্ঠান না করা, জনসমাগম যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা, পর্যটনে না যাওয়া, অযথা বাইরে ঘোরাঘুরি না করা এবং সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) জাতীয় সংসদে শোকপ্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।
অধিবেশনের প্রথম দিনের শুরুতেই জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে শুভেচ্ছা জানান স্পিকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী। পরে সিলেট-৩ আসনের সরকার দলীয় সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, এইচ টি ইমাম ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদসহ বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য এবং বিশিষ্টজনের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব আনা হয়।
মহামারির মধ্যেও সংবিধানের নিয়ম রক্ষায় আজ বেলা ১১টায় শুরু হয় চলতি সংসদের দ্বাদশ অধিবেশন। সাংসদেরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে অধিবেশনে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু আবার বিশ্বব্যাপী প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশেও গত কিছুদিন ধরে হঠাৎ দ্রুত সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২৯, ৩০, ৩১ মার্চ দেশে এতো হারে করোনা শনাক্ত হয়েছে যা চিন্তার বাইরে। অনেকে হয়ত মনে করছে, যেহেতু টিকা নিয়েছেন আর কিছু হবে না। স্বাস্থ্যবিধি মানা বন্ধ হয়েছে। যত বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে সেখানে অনেকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, যারা পর্যটনে গেছে সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন।’
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের সরকারের ১৮ দফার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবার ধীরে ধীরে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার চেষ্টা করছে। সেজন্য জনগণের সহায়তা দরকার। সেই সঙ্গে সবসময় মাস্ক পরা, নাকে গরম পানির ভাপ নেওয়া ও নাকে সরিষার তেল দেওয়ার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক সংসদ সদস্য ও বিশিষ্ট জনকে হারিয়েছি এই করোনার কারণে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী একজন ভালো সংগঠক ছিলেন। কয়েকদিন আগেও কথা হল। সবসময় সক্রিয় ছিল। চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা নিতে না নিতেই চলে গেলেন। মানুষের জন্য কাজ করার আগ্রহ ছিল তার।’
বিএনপির প্রয়াত নেতা মওদুদ আহমদ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মওদুদ আহমদ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আইনজীবী ছিলেন বলে লিখেছেন। আসলে তিনি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার কোনো অ্যাপয়েন্টেড আইনজীবী ছিলেন না। তিনি ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে ঘুরতেন। বঙ্গবন্ধুর পিএসের সঙ্গে ঘুরতেন। বিশেষ করে ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মওদুদ আহমদ অনেক লেখা মনের মাধুরী মিশিয়ে লিখেছেন। রাজনীতিতে তাঁর বারবার দলবদল করার অভ্যাস ছিল। তিনি ট্যালেন্টেড মানুষ ছিলেন। কিন্তু দেশপ্রেম কাজে লাগালে অনেক কিছু দিতে পারতেন।’
আলোচনায় অংশ নেন সরকারি দলের সংসদ সদস্য ফারুক খান, নুরুল ইসলাম নাহিদ, পীর ফজলুর রহমান, আবদুস শহীদ, নুরুল ইসলাম, বিএনপির হারুনুর রশীদ, জাতীয় পার্টির মসিউর রহমান রাঙা প্রমুখ।
আলোচনা শেষে সংসদে সর্বসম্মতভাবে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।