রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৮ মার্চ, ২০২১ ৬:৩৬ : অপরাহ্ণ
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে হরতালকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে থানার ওসিসহ শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়ার গেছে। আজ রোববার (২৮ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের নিমতলা শিকারপুর এলাকায় হরতালের সমর্থনে মিছিল ও পিকেটিংয়ের সময় এই সংঘর্ষ হয়।
সিরাজদিখান থানার ওসি এসএম জালাল উদ্দিনকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার মাথায় ৩১টি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ছাড়াও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে ওসি (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান ও পুলিশ কনস্টেবল শাহিন।
সংঘর্ষে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর আব্দুল হামীদ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সিরাজদিখানে উপজেলার সভাপতি মাওলানা ওবাইদুল্লাহ কাসেমী। তিনি বলেন, পুলিশের গুলি ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের হামলায় মাদরাসার শতাধিক ছাত্র আহত হয়েছেন।
জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে অবস্থান নেয় হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা। তারা প্রায় ২ ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। এ সময় হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর আব্দুল হামীদের নেতৃত্বে আরেকটি অংশ শিকারপুর সড়কে অবস্থান নেয়।
দুপুর ১২টার দিকে মহাসড়ক ছেড়ে শিকারপুর রোডে চলে আসেন হেফাজতের কর্মীরা। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সিরাজদিখান থানার ওসির ওপর হামলা করে দলটির কয়েকজন কর্মী। ওসিকে উদ্ধারের পরে পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি চালায়। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা হরতাল সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সকালে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের কুচিয়ামোড়া ও নিমতলি এলাকায় অবস্থান করে অবরোধের চেষ্টা করছিল হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হেফাজতের নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দেন। এরপর নিকটস্থ বড় বড়শিকারপুর ও শুলপুর এলাকায় হেফাজতের নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। ইট-পাটকেল ছুঁড়ে আহত করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে।
সংঘর্ষের সময়ে বেশকয়েকটি দোকানপাট ভাংচুর, তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এ ছাড়া একটি অটোরিকশা ভাংচুর করে নেতা-কর্মীরা। পরে হেফাজতের কর্মীরা উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ সভাপতির বাড়িঘর ভাংচুর করে।
জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন জানান, সিরাজদিখান থানার ওসির মাথা ফেটে গেছে। আরো কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।