প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রকাশের সময় :২৬ মার্চ, ২০২১ ৮:৪৫ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রামে হাটহাজারীতে মাদারাসাছাত্রদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেলস্টেশনে হামলা, ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন কওমি মাদ্রাসার ছাত্ররা। আজ শুক্রবার (২৬ মার্চ) দুপুর আড়াইটায় শহরের প্রধান সড়ক টিএ রোডে মাদরাসার ছাত্ররা ব্যাপক বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় তারা রেলওয়ে স্টেশনে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এছাড়া তারা শহরের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালও ভাঙচুর করেছে। পুলিশের সাথে সংঘর্ষে শহরের কাউতলী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আশিক (২৫) নামে এক যুবক মারা গেছেন।
জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই যুবক মারা যান। সেখান থেকে ওই যুবকের লাশ নিয়ে মিছিল করতে বেরিয়ে পড়েন মাদ্রাসা ছাত্ররা। পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হামলার সময় সে গুলিবিদ্ধ হয় বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাটহাজারীতে জুমার নামাজের পর পুলিশের গুলিতে চার জন নিহত হওয়ার খবরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসা ও জামিয়া সিরাজুল উলুম মাদরাসার ছাত্ররা ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। বিকেল ৪টার দিকে তারা জেলা সদরের বিভন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে তারা রেলস্টেশনে বিক্ষোভ করে আগুন ধরিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। রেলস্টেশনের সিগন্যাল, মাস্টার রুম, কন্ট্রোল রুমসহ কর্মকর্তাদের কক্ষ ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। জেলা পরিষদ কার্যালয় ও শহরের কাউতলীর বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে শহরের বিভিন্ন স্থানে আলোকসজ্জা ও সড়ক সজ্জিতকরণ ব্যানার ফেস্টুন ভেঙ্গে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা। শহরের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা সিসিটিভি ক্যামেরাও ভাংচুর করা হয়। বিক্ষুব্ধরা নরেন্দ্র মোদি বিরোধী স্লোগান দেয়।
রেলস্টেশনের সিগন্যাল বক্স ভেঙ্গে ফেলায় ঢাকার সাথে সিলেট ও চট্টগ্রামের সাথে সকল প্রকার ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ঢাকাগামী কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে প্রবেশ করার সময় বিক্ষুব্ধরা পাথর নিক্ষেপ করলে ট্রেনটি ফিরে যায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাথে দেশের বিভিন্ন স্থানে দূরপাল্লার সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. শোয়েব আহমেদ জানান, বিকেলে কয়েকশ মাদরাসাছাত্র স্টেশনে এসে হামলা চালায়। এসময় তারা প্যানেল টিকিট কাউন্টার, প্যানেল বোর্ড ও যাত্রীদের চেয়ার ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এতে করে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। কয়েকটি ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়েছে।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি মাজহারুল করিম জানান, মাদরাসা ছাত্ররা রেল স্টেশন, জিআরপি পুলিশ ফাঁড়ি ও পুলিশ সুপার কার্যায়লসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।