বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আইন-আদালত

শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা: রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ১৪ জঙ্গির ফাঁসি



রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৩ মার্চ, ২০২১ ২:০০ : অপরাহ্ণ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সমাবেশস্থলে বোমা পুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় ১৪ জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আবু আব্দুল্লাহ ভুঁইয়া সাংবাদিকদের বলেছেন, শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টার মামলায় আমরা অভিযোগ প্রমাণিত করতে পেরেছি।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৪ আসামিরা হলেন- মো. আজিজুল হক ওরফে শাহনেওয়াজ, মো. লোকমান, মো. ইউসুফ ওরফে মোছহাব মোড়ল, মোছহাব হাসান ওরফে রাশু, শেখ মো. এনামুল হক, মো. মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ, মো. মাহমুদ আজহার ওরফে মামুনুর রশিদ, মো. রাশেদুজ্জামান ওরফে শিমুল, মো. তারেক, মো. ওয়াদুদ শেখ ওরফে গাজী খান, মো. আনিসুল ইসলাম ও সারোয়ার হোসেন মিয়া, মাওলানা আমিরুল ইসলাম ওরফে জেন্নাত মুন্সী ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।

এর মধ্যে আজিজুল হক, লোকমান, মো. ইউসুফ, শেখ মো. এনামুল হক, মোছাহেব হাসান-পাঁচ আসামি পলাতক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

এ ছাড়া এই মামলায় মাওলানা আমিরুল ইসলাম ওরফে জেন্নাত মুন্সী ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান জামিনে ছিলেন। রায় ঘোষণার সময় অন্য সাত আসামির সঙ্গে তারাও আদালতে হাজির ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজি-বি) নেতাকর্মী বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে গত ১১ মার্চ রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৩ মার্চ দিন ধার্য করেন আদালত।

এই ঘটনায় মোট তিনটি মামলা হয়েছিল। তার মধ্যে দুইটি মামলার রায় বিচারিক আদালতে আগেই হয়েছে।

আজ অপর মামলার রায় ঘোষণা হলো।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ প্রথম দফায় ক্ষমতায় এসেছিল ১৯৯৬ সালে।

২০০০ সালের ২২ জুলাই কোটালীপাড়ার শেখ লুৎফর রহমান সরকারি আদর্শ কলেজ মাঠে শেখ হাসিনার সমাবেশ করার কথা ছিল। ওই সমাবেশের প্যান্ডেল তৈরির সময় ২১ জুলাই কলেজের পাশ থেকে ৭৬ কেজি শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করে পুলিশ।

সেই ঘটনায় কোটালীপাড়া থানায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা, হত্যার ষড়যন্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মোট তিনটি মামলা করা হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের পাশে একটি চায়ের দোকানের পেছনে এই বোমা পেতে রাখা হয়েছিল। বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটিয়ে শেখা হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

ওই মামলার তদন্ত শেষে ২০০১ সালে ১৫ নভেম্বর ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডি। ২০০৪ সালের ২১শে নভেম্বর আদালতে ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

হরকাতুল জিহাদের শীর্ষনেতা মুফতি আবদুল হান্নান এই মামলায় মূল আসামি ছিলেন। তবে অন্য মামলায় মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় মামলার রায়ে তার নাম বাদ দেয়া হয়েছে।

এর আগে বোমা পুঁতে হত্যা চেষ্টা মামলা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আদালত। রায়ে গুলি করে তাদের প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা বলা হয়।

সেই সঙ্গে ১৩ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্তরা সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজি-বি) নেতা-কর্মী বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

হত্যা চেষ্টা মামলায় আপিলের রায়ও ঘোষণা করা হয়েছে। গত ১৭ই ফেব্রুয়ারি আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে হাইকোর্ট ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামি ও ১৪ বছর দণ্ডিত দুই আসামির সাজাও বহাল রাখা হয়েছে। ১৪ বছর দণ্ডিত অপর এক আসামিকে খালাস দিয়েছেন উচ্চ আদালত।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর