শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

রাজনীতি উল্টো পথে হাঁটছে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে শিক্ষা নিন: রাষ্ট্রপতি



রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৭ মার্চ, ২০২১ ৭:০০ : অপরাহ্ণ

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘ব্যক্তির চেয়ে দল, দলের চেয়ে দেশ বড়- এটাই হচ্ছে রাজনীতির মূল আদর্শ। কিন্তু আজকাল যেন রাজনীতি উল্টো পথে হাঁটছে। রাজনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানাবো বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ থেকে শিক্ষা নিন।’

আজ বুধবার (১৭ মার্চ) বিকেলে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশে রাজনীতির গতিধারা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে আবদুল হামিদ বলেন, ‘আজ আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর পার করছি। এ সময়ে রাজনীতিতে অনেক চড়াই-উৎরাই ঘটেছে। কিন্তু রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন কতটুকু হয়েছে তা ভেবে দেখতে হবে।’

কিছু সুবিধাবাদী লোক রাজনীতিটাকে পেশা বানিয়ে ফেলেছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘রাজনীতি আর পেশা এক জিনিস নয়। পেশার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি নিজের এবং পরিবার পরিজনের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন। আর রাজনীতি হচ্ছে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার একটি মহৎ ক্ষেত্র। তাই রাজনীতিকে পেশা মনে করলে দেশ ও জনগণের কথা ভুলে নিজের ও পরিবারের গণ্ডির মধ্যেই ঘুরপাক খেতে হবে।’

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘স্বাধীনতার আজ ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এসে আমি বলব- আসুন, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের জন্য কাজ করি। আমাদের মনে রাখতে হবে, এ দেশটি আমাদের সবার। বহু রক্তের বিনিময়ে এ দেশটি আমরা স্বাধীনভাবে পেয়েছি। আমাদের মনে রাখতে হবে, অনেক চড়াই-উৎরাই ও প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে আমরা আজ এ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি।’

আবদুল হামিদ বলেন, ‘১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টঙ্গীপাড়ায় এক লাল সূর্য উঠেছিলো। যার নাম শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালী জাতিকে নতুন এক পরিচয় এনে দিয়েছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু স্কুল জীবন থেকেই মানুষের জীবনের মঙ্গল কামনায় কাজ করেছেন এবং মৃত্যুর দিন পর্যন্তও তিনি মানুষের জন্যে কাজ করেছেন।’

জাতির জনকের সব স্মৃতি সংরক্ষণ করার আহ্বান জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বাঙালির আত্মপরিচয়ের ঠিকানা। বাঙালি ও বাংলাদেশের স্বার্থকেই জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধু একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে সমৃদ্ধির সোপানে নিয়ে যাওয়ার জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করেন। জাতির জনকের আদর্শে সবাইকে নিজেদের জীবন গঠন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্যে জোরালে কণ্ঠে ঘোষণা দেন, ‘আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ একদিন বিশ্বের বুকে মাথা উচু করে দাঁড়াবে।’

সূচনা দিনের আয়োজনের থিম: ‘ভেঙেছে দুয়ার এসেছ জ্যোতির্ময়’। বিকাল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে শিশুদের কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করছেন জনপ্রিয় অভিনেতা সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান ‍নূর।

শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বাঙালির ইতিহাসের অনন্য এই উদযাপন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার স্ত্রী ফাজনা আহমেদও অনুষ্ঠানে এসেছেন। অনুষ্ঠানস্থলে তাদের অভ্যর্থনা জানান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা, রাষ্ট্রপতির স্ত্রী রাশিদা খানম এবং স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী রয়েছেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতারা। এছাড়াও জাতীয় বরেণ্য ব্যক্তিরাও অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।

ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা। বর্ণিল এই আয়োজনের প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে জাতির পিতার স্মৃতি ও স্মারক সংরক্ষণের আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর