রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করছে: প্রধানমন্ত্রী



রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৬ মার্চ, ২০২১ ৬:৩০ : অপরাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার গঠন করে মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ অর্জন করেছে। আমরা আজ আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি।

১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস-২০২১ উপলক্ষে তিনি সকল শিশুসহ বাংলাদেশের সকল নাগরিক এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, এবারের জাতীয় শিশু দিবসের প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুর হৃদয় হোক রঙিন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার প্রত্যয়ে সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ। রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ এবং ডেল্টা প্লান-২১০০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তিনি দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব শিশুদের কল্যাণে বর্তমানকে উৎসর্গ করার আহবান জানান।

সবাই মিলে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের শিশুরা আগামীর বাংলাদেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠুক, মেধা ও প্রজ্ঞায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করুক, আন্তর্জাতিকভাবে গৌরব বয়ে আনুক প্রিয় মাতৃভূমির জন্য।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে শিশু আইন প্রণয়ন ও প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেন। আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়ন ও সুরক্ষার বিভিন্ন কার্যক্রমের সাথে জাতীয় শিশু নীতি-২০১১, শিশু আইন-২০১৩, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭ প্রণয়ন করেছে। এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শিশু দিবস উদযাপন, সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের পুনর্বাসন এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর বিকাশ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সরকার প্রিয় মাতৃভূমিকে শিশুদের জন্য নিরাপদ আবাস ভূমিতে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান করা হচ্ছে। প্রায় শতভাগ শিশু স্কুলে যাচ্ছে। আমরা শিশুদের জন্য জাতির পিতার জীবন ও কর্মভিত্তিক বই প্রকাশ এবং পাঠ্য বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সংযোজন করেছি। সকল শিশুর সমঅধিকার নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে পিতা-মাতা, পরিবার ও সমাজের ভূমিকা অপরিসীম। শিশুর প্রতি সহিংস আচরণ এবং সকল ধরনের নির্যাতন বন্ধ করার জন্যে আজকের এদিনে তিনি সবাইর প্রতি আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, সকল প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন ‘সোনার বাংলা’ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী চক্র ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে পরিবারের প্রায় সকল সদস্যসহ নৃশংসভাবে হত্যা করে দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘ ২১ বছর পর জনগণের রায়ে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার কার্যক্রম শুরু করে। এ হত্যাকান্ডের বিচারের রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তৎকালীন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাই তাঁর জন্মদিনকে শিশুদের জন্য উৎসর্গ করে আমরা এ দিনটিকে ‘জাতীয় শিশু দিবস’ ঘোষণা করেছি। তিনি জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শহিদদের প্রতিও।

শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর অপরিসীম মমতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাল্যকাল থেকেই তিনি ছিলেন নির্ভিক, অমিত সাহসী, মানবদরদি এবং পরোপকারী। ছিলেন রাজনীতি ও অধিকার সচেতন। প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এই বিশ্বনেতার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের মূল লক্ষ্য ছিল বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করা, ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও অশিক্ষার অন্ধকার থেকে মুক্ত করে উন্নত জীবন নিশ্চিত করা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্কুলে পড়ার সময়েই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশ লাভ করতে থাকে। ধীরে ধীরে তিনি হয়ে উঠেন বাংলার নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ের শেষ আশ্রয়স্থল। ১৯৪৮-৫২’র ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮-র আইয়ুব খানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ’৬২-র শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-র ছয় দফা, ’৬৮-র আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ’৬৯-র গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-র নির্বাচন এবং ৭১-র মহান মুক্তিযুদ্ধ জাতির পিতার অবিসংবাদিত নেতৃত্বে পরিচালিত হয়। তাঁর নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।’

প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস-২০২১ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

সূত্র : বাসস

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর