রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৬ মার্চ, ২০২১ ৫:০০ : অপরাহ্ণ
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কেউই জাতীয় পার্টির বন্ধু নয়। জাতীয় পার্টির ওপর বিএনপি যে অত্যাচার করেছে, আল্লাহর বিচারে তারা এখন দশগুণ বেশি ফিরে পাচ্ছে। আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে জাতীয় পার্টির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে, জাতীয় পার্টিকে ভাঙনের মুখে ফেলেছে।
আজ মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে পার্টির নির্বাহী ও কেন্দ্রীয় সদস্যদের সাংগঠনিক সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশের মানুষের জন্য রাজনীতি করে না উল্লেখ করে সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেন, তারা রাজনীতি করে ক্ষমতায় গিয়ে লুটপাট করার লক্ষ্য নিয়ে। লুটপাট করে তারা এত টাকার মালিক হয়েছে যে, ছোটখাটো নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কোটি কোটি টাকা নিয়ে মাঠে নামে।
তিনি বলেন, যারা রিকশা ভাড়া দিতে পারতো না, তারা এখন পাজেরো গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। যারা বাসা ভাড়া দিতে পারতো না, তারা অসংখ্য বাড়ির মালিক। যারা ক্ষমতায় থাকে তারা কালোটাকার সাথে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ কলুষিত করেছে।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা মানায় না মন্তব্য করে জি এম কাদের বলেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল। দেশের মানুষ স্বাধীনতা পেলেও আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সৃষ্ট বৈষম্যের শিকার হয়েছে। তারা ১৯৯১ সালের পর রাষ্ট্রক্ষমতায় গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কবর দিয়েছে। সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে তারা যেভাবে সংবিধান সংশোধন করেছে, তাতে দেশে গণতন্ত্র চর্চার পরিবেশ নেই।
তিনি বলেন, ১৯৯১ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে দলীয়করণ করেছে, যাকে স্বৈরতন্ত্র বলা যায়। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দলীয়করণে দেশের মানুষের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ বা বিএনপি করলেই চাকরি ও ব্যবসায় সুযোগ আছে, সাধারণ মানুষের কোনো অধিকার নেই। হিসাব মতো দেশে মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, কিন্তু যারা সরকারি দল করে তাদের আয় বেড়েছে হাজার হাজার গুণ। কিন্তু দেশের মানুষ মাথাপিছু আয়ের সুফল থেকে বঞ্চিত।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান দাবি করেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কখনই জোর করে ক্ষমতা গ্রহণ করেননি। তখনকার রাষ্ট্রপতি দুর্নীতির কারণে রাষ্ট্র পরিচালনায় অপারগতা প্রকাশ করে রেডিও-টেলিভিশনে ভাষণ দিয়ে সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, মীর আবদুস সবুর আসুদ, অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক প্রমুখ।