রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১১ মার্চ, ২০২১ ৯:০০ : পূর্বাহ্ণ
আজ ২৬ রজব, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে মেরাজ। সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ রাসূল হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো মেরাজ। এ দিন দিবাগত রাতে তিনি ঊর্ধ্ব জগতে গমন করেন এবং সাত আসমান অতিক্রম করে আল্লাহর বিভিন্ন কুদরত প্রত্যক্ষ করেন। এ রাতে পাঁচ ওয়াকত সালাত ফরজ করা হয়। মেরাজ একদিকে যেমন হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর অন্যতম মুজেজা; তেমনিভাবে এটি মুসলিম উম্মাহর জন্যও অনেক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।
আরবি ভাষায় মেরাজ অর্থ হচ্ছে সিঁড়ি। আর ফার্সি ভাষায় এর অর্থ ঊর্ধ্ব জগতে আরোহণ। পবিত্র কুরআনে মক্কা মোয়াজ্জমা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত ভ্রমণকে পবিত্র ‘ইসরা’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। পবিত্র হাদিসে বায়তুল মুকাদ্দাস থেকে সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত উপনীত হওয়া ও আরশে আজিমে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের মহিমান্বিত ঘটনাকে মেরাজ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
সারা পৃথিবীর মুসল্লিম উম্মার মতো বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যথাযোগ্য মর্যাদায় পবিত্র এই রাত পালন করবেন।
আজ বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ‘মিরাজুন্নবী (সা.)’-এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. মুশফিকুর রহমান। আলোচনা করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সাবেক পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা রফিক আহমাদ ও জামেয়া ইসলামিয়া মাদরাসার শায়খুল হাদিস ড. মাওলানা মুশতাক আহমদ।
এছাড়া দেশব্যাপী সব মসজিদে মিলাদ মাহফিল, নফল নামাজ আদায়, কুরআন তেলাওয়াতসহ মুসলমানরা রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি করবেন।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) নবুয়তের একাদশ বছরে ৬২০ খৃষ্টাব্দে রজব মাসের ২৬ তারিখ রাতে সশরীরে জাগ্রত অবস্থায় হযরত জিবরাইল (আ.) ও হযরত মিকাইলের (আ.) সঙ্গে বিশেষ বাহন বোরাকের মাধ্যমে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা হয়ে আরশে আজিমে যান। প্রথম আসমান থেকে একে একে সপ্তম আসমান এবং সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত এবং সেখান থেকে একাকী রফরফ বাহনে আরশে আজিমে পৌঁছান ও আল্লাহ তায়ালার দিদার লাভ করার পরম সৌভাগ্য অর্জন করেন। তিনি সেখানে জান্নাত-জাহান্নামসহ আল্লাহর বিভিন্ন কুদরত প্রত্যক্ষ করেন। অবলোকন করেন সৃষ্টি জগতের সমস্ত কিছুর অপার রহস্য।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন, ‘পবিত্র মহান সে সত্তা, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতের বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি, যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই। তিনিই সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।’-(সূরা ইসরা : আয়াত ১)।
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর জীবনের সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা হচ্ছে ‘মেরাজ’। মেরাজ ইসলামের ইতিহাসে এমনকি পুরা নবুওয়াতের ইতিহাসেও এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। কারণ হযরত মুহাম্মদ (সা.) ছাড়া অন্য কোনো নবী এই পরম সৌভাগ্য লাভ করতে পারেননি।