রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১০ মার্চ, ২০২১ ১০:০৮ : পূর্বাহ্ণ
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাটে আজ বুধবার (১০ মার্চ) সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ মার্চ) রাতে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমানের (বাদল) অনুসারীদের সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় একজন নিহত হওয়ার পর থমথমে পরিস্থিতিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
ইউএনও মো. জিয়াউল হক মীর বলেন, ১৪৪ ধারা চলাকালে পৌর এলাকায় ব্যক্তি, সংগঠন, রাজনৈতিক দল, গণজমায়েত, সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা কিংবা যে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ও রাজনৈতিক প্রচার-প্রচারণা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে পৌর শহরে ৪ জনের বেশি লোক জমায়েত হতে পারবে না।
এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি বসুরহাট পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল।
বসুরহাটে গতকাল বিকেল ও রাতে দুই দফা সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। এর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় দেশীয় অস্ত্রসহ ২৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ-গুলিতে সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মুজাক্কিরের রক্তের দাগ মুছতে না মুছতেই ফের রক্তাক্ত হলো নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভা। আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ-গোলাগুলির ঘটনায় রাতে আলাউদ্দিন (৩২) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের মমিনুল হকের ছেলে।
সোমবার বিকেলে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানকে মারধরের অভিযোগ ওঠে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে মানববন্ধন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। আর বিকেলে বসুরহাটের রূপালী চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল ও তার সমর্থকরা।
সমাবেশ চলাকালে আবদুল কাদের মির্জার সমর্থকরা তাদের ধাওয়া করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের সময় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এসময় দোকানপাট ও কয়েকটি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়।
পরে পুলিশ ও র্যাব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসিসহ চার পুলিশ সদস্য এবং দুই পক্ষের অন্তত ২০জন আহত হন।
পরে রাত ১০টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এসময় আলাউদ্দিন নামে একজন নিহত হন। ১৩ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হন অন্তত ৩০ জন। এদের মধ্যে হৃদয় নামের একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা প্রেরণ করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ অপর ৯জন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দুই পক্ষের গোলাগুলির ঘটনায় জনমনে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এদিকে গতকাল কোম্পানীগঞ্জে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ভাঙচুর ও গুলি বর্ষণের ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ ৭১ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নির্দেশে দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুর রহমান।