নিউজিল্যান্ডে ৮ দশমিক ১ মাত্রাসহ পরপর তিনটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে তিনটি ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল সাতের ওপরে। ভূমিকম্পের জেরে সেখানে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। পরে অবশ্য সে সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে পূর্ব উপকূলে এখনো জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সবশেষ জনবসতিহীন কারমেডিক আইল্যান্ডে ৮ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। নিউজিল্যান্ডের উপকূল থেকে এক হাজার কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে কেরমাডেক আইল্যান্ডের অবস্থান। এরপরই দেশটির জাতীয় জরুরি সংস্থা পূর্ব উপকূলীয় এলাকায় সুনামি সতর্কতা জারি করে। যদিও এলাকাবাসীকে সরিয়ে নেয়ার পর তা প্রত্যাহার করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দিবাগত রাত ২টা ২৭ মিনিটে গিসবার্ন থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় নর্থ আইল্যান্ডে ৭ দশমিক ২ মাত্রার প্রথম ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এরপর কারমাডেক আইল্যান্ডে ভোর ৬টা ৪১ মিনিট দ্বিতীয়বার ৭ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে নিউজিল্যান্ডের উপকূলীয় এলাকা।
তৃতীয় দফায় সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পটি আঘাত হানার পর নিউজিল্যান্ডের বেশ কিছু শহরের মানুষের মধ্যে উঁচু স্থানে যাওয়ার হিড়িক পড়ে গেছে। দিগ্বিদিক হয়ে মানুষজন ছোটাছুটি করছেন।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে আমার ঘুম ভেঙে যায়। আমি এক লাফে খাট থেকে দরজার দিকে যাই।’
আরো একজন জানান, ‘এটি খুবই শক্তিশালী ছিলো। সুনামি সতর্কতার পরপর আমাদের শহর থেকে উঁচু স্থানে আসি। শহরটিকে ভুতের শহরের মতো লাগছিলো।’
এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা কেটে গেলে নিজ বাড়িতে ফেরার অনুমতি দেয়া হয় জনগণকে। তবে সৈকত এড়িয়ে চলার নির্দেশ বহাল আছে।
ভূমিকম্পের উপত্তিস্থল থেকে সুনামি হতে পারে এমন শঙ্কা প্রকাশ করে এক বিবৃতিতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সতর্ক কেন্দ্র জানায়, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত সুনামি হতে পারে। তাই ওই উপকূলীয় এলাকায় সবাইকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে, নিরাপদে আছেন নিউজিল্যান্ড সফরে দেশটিতে অবস্থান করা বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা। বিসিবির পরিচালক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস জানিয়েছেন, সবাই ভালো আছেন।
এর আগে ২০১১ সালে ক্রাইস্টচার্চ শহরে ৬.৩ মাত্রার এক ভূমিকম্পের আঘাতে ১৮৫ জনের প্রাণহানি ঘটে। ধ্বংস হয় বহু ঘরবাড়ি।
সূত্র: বিবিসি
