রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২ মার্চ, ২০২১ ১১:৩০ : পূর্বাহ্ণ
কারা হেফাজতে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যু এবং কার্টুনিস্ট কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশন। কিশোরের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি দ্রুত এসব ঘটনার স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেট। একই সঙ্গে বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পুনর্বিবেচনার আহ্বানও জানানো হয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে।
স্থানীয় সময় সোমবার (০১ মার্চ) জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানান তিনি।
হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেট বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি পুংখানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ হওয়া উচিৎ। এই আইনে মুশতাক আহমেদের নামে মামলা হয়। মত প্রকাশের কারণে এই আইনের আওতায় যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে।’
গত বছরের মে মাসে লেখক মুশতাককে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করার পর নয় মাস তিনি কারাবন্দী ছিলেন। বার বার জামিন আবেদন করা হলেও তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি কারাগারেই মারা যান তিনি। একই অভিযোগে এখন আটক রয়েছেন কার্টুনিস্ট আহমেদ কিশোর।
কার্টুনিস্ট কিশোরকে নির্যাতনের বিষয়ে মিশেল বাশেলেট উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘অভিযোগের তাৎক্ষণিক ও কার্যকর তদন্ত করতে হবে। একই সঙ্গে কিশোরের নিরাপত্তা এবং সুস্থতা নিশ্চিত করতে হবে।’
এ সময় মানবাধিকারের প্রতি বাংলাদেশের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারকেই মুশতাকের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। অপর আটককৃতদের সঙ্গে অসদাচরণের যে অভিযোগ এসেছে তারও দ্রুত তদন্ত হওয়া উচিত।’
মুশতাকের মৃত্যুর বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের হামলায় ৩৫ জন আহত এবং সাতজন আটকের খবরেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেট। মুশতাকের মৃত্যুতে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেওয়ায় রুহুল আমিনকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
বাশেলেট বলেন, ‘সরকারের সমালোচনার শাস্তি দিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুর্বলভাবে সংজ্ঞায়িত বিধানগুলোর বিষয়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ জানিয়েছে। বাংলাদেশের জরুরিভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ স্থগিত করা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে এর বিধানগুলো পর্যালোচনা করা দরকার। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করতে আমার অফিস প্রস্তুত আছে।’