শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

এক মঞ্চে বসে মাহবুব তালুকদারের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন সিইসি



রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২ মার্চ, ২০২১ ৬:০০ : অপরাহ্ণ

একই মঞ্চে বসে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের ওপর প্রকাশ্যে ক্ষোভ ঝাড়লেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। আজ (২ মার্চ) মঙ্গলবার ‘জাতীয় ভোটার দিবসের’ অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার তার লিখিত বক্তব্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও অনিয়মের মডেল বলে মন্তব্য করেন। পাল্টা হিসেবে সিইসি বলেছেন, মাহবুব তালুকদার কমিশনকে হেয়, অপদস্থ ও নিচে নামানোর জন্য যা করা দরকার সবই করে চলেছেন। তিনি (মাহবুব তালুকদার) ব্যক্তিগত স্বার্থে ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কমিশনকে হেয় করছেন।

নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ভোটার দিবস উপলক্ষে মাহবুব তালুকদার প্রথমে লিখিত বক্তব্যে বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরেন। শেষে সিইসি তার বক্তব্যের জবাব দেন।

এর আগেও নির্বাচনে অনিয়ম নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন মাহবুব তালুকদার। কমিশন থেকেও যথাসম্ভব ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু একই মঞ্চে বসে এভাবে কে এম নূরুল হুদা ও মাহবুব তালুকদারের মধ্যে এই প্রথম পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেয়ার ঘটনা ঘটল। এ সময় নির্বাচন কমিশনের কমিশনার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ক্ষোভের সঙ্গে বক্তব্য দেওয়ার সময় সিইসি যখন মাহবুব তালুকদারকে নিয়ে কথা বলছিলেন, তখন এই নির্বাচন কমিশনারও পড়েন অস্বস্তিতে। তবে তিনি মঞ্চ ছেড়ে যাননি।

সিইসির ঠিক আগেই অনুষ্ঠানে নিজের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মাহবুব তালুকদার। সেখানে তিনি বরাবরের মতোই দেশের নির্বাচন পরিস্থিতি এবং কমিশনের ভূমিকা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন।

লিখিত বক্তব্যে মাহবুব তালুকদার বলেন, এককেন্দ্রিক স্থানীয় নির্বাচনের তেমন গুরুত্ব নেই। নির্বাচনে মনোনয়ন লাভই এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও হানাহানি, মারামারি, কেন্দ্রদখল, ইভিএম ভাঙচুর ইত্যাদি মিলে এখন অনিয়মের মডেল তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার না হলে এখন যে ধরনের নির্বাচন হচ্ছে, তার মান আরও নিম্নগামী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এর পর প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে এসে সিইসি কেএম নূরুল হুদা বলেন, মাহবুব তালুকদার অভ্যাসগতভাবে সারাজীবন আমাদের এ নির্বাচনে যোগ দেওয়ার পর দিন থেকে যা কিছু ইসির নেগেটিভ দিক, তা পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে পাঠ করতেন। আজকে এর ব্যতিক্রম হয়নি।

তিনি বলেন, ভেবেছিলাম ভোটার দিবস হিসেবে তিনি (মাহবুব তালুকদার) কিছু বলবেন। কিন্তু তিনি রাজনৈতিক বক্তব্য রাখলেন। ইসিকে কতখানি হেয় করা যায়, কতখানি নিচে নামানো যায়, অপদস্থ করা যায় তা তিনি করে চলেছেন।

নূরুল হুদা বলেন, দেশের নির্বাচন কমিশনের স্বার্থে তিনি (মাহবুব তালুকদার) কাজ করেন না; ব্যক্তিস্বার্থে ও একটা উদ্দেশ্য সাধন করার জন্য এ কমিশনকে অপদস্ত করার জন্য যতটুকু যা করা দরকার, যখন যতটুকু করা দরকার, ততটুকু করেছেন উনি।’

সিইসি বলেন, এ নির্বাচন কমিশনে যোগ দেওয়ার পর যতগুলো সভা হয়েছে, সব সময় মাহবুব তালুকদার ‘একই আচরণ’ করে আসছেন। এ কমিশনের আরও এক বছর মেয়াদ আছে, তিনি হয়তো তা চালিয়েই যাবেন।

এর আগে মাহবুব তালুকদার সম্প্রতি চট্টগ্রামের রাউজান পৌরসভার ভোটের উদাহরণ দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে চমক সৃষ্টিকারী পৌরসভা নির্বাচন হয়েছে চট্টগ্রামের রাউজানে। মেয়র ও ১২ জন কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে রাউজান থেকে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও তখন তুলে নেওয়া হয়েছে। এর আগে উপজেলা নির্বাচনেও ঠিক এভাবে রাউজানে সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে এটা ‘নির্বাচন’ না বলে ‘মনোনয়ন’ বলাই সম্ভবত অধিকতর সংগত।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর