নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাপরাশিরহাট বাজারে আওয়ামী লীগের দুইপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক সংবাদকর্মীসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৩৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আহতদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ, ফাঁকা গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেছে।
আজ (১৯ ফেব্রুয়ারি) শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে চাপরাশিরহাট পূর্ব বাজারে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দলীয় সূত্রের খবর, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙ্গে দেওয়া নিয়ে সেতুমন্ত্রীর ওবায়দুল কাদেরের ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধরা হলেন, উপজেলার বড়রাজাপুর গ্রামের আবদুল ওয়াহিদের ছেলে সাইদুর রহমান (২৬), চরকাঁকড়া ইউনিয়নের সিরাজুল ইসলামের ছেলে নুরুল অমিত (২০), বসুরহাট পৌরসভার আবুল কালামের ছেলে রায়হান (২০)। তাদেরকে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হচ্ছেন, স্থানীয় সংবাদকর্মী বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির, চরফকিরা ইউনিয়নের মো. কাঞ্চন (৬০), মুছাপুর ইউনিয়নের আবুল খায়েরের ছেলে মাসুদ (২৫), চরকাঁকড়া ইউনিয়নের আবদুস সাত্তারের ছেলে কামরুল হাসান (৩০), চরফকিরা ইউনিযনের আবদুল মান্নানের ছেলে ফরহাদ (৪০), চরফকিরা ইউনিয়নের বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির (২৮) বসুরহাট পৌরসভা এলাকার আদনান (২৪) এবং মারুফ (২৫)।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাদের মির্জা বৃহস্পতিবার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙে দিলে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল চরফকিরা ইউনিয়নের চাপরাশীরহাট বাজারে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ শুক্রবার বিকেলে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন। বাদলের অনুসারীরা চাপরাশীরহাট বাজারে মিছিল করতে গেলে কাদের মির্জার সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে কাদের মির্জা উপস্থিত হলে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয় এবং তারা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে সংঘর্ষে জড়ানো নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল হক জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১০-১২ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। পরে এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংঘর্ষের পর নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে নিজের দলের নেতাকর্মীদের ওপর চাপরাশিরহাট বাজারে হামলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। তার কোনো নেতাকর্মী মারা গেলে তার দায়দায়িত্ব আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন ও প্রশাসনকে নিতে হবে বলে জানান তিনি।