রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১২:০০ : অপরাহ্ণ
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেছেন, দেশটির পরিস্থিতি এমন এক জায়গায় চলে গিয়েছিল যেখানে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণ ‘অবশ্যম্ভাবী’ হয়ে পড়েছিল। তিনি বলেন, ‘এই পথ দেশের জন্য অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছিল; আর এ কারণেই অনেক অনুরোধের পর আমাদের এই পথে হাঁটতে হয়েছে।’
মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) দেশটির সেনাবাহিনীর ফেসবুক পাতায় সেনাপ্রধানের যে বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, ‘বহুবার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। সে কারণেই আমরা এই পথ বেছে নিতে বাধ্য হলাম’।
গত বছর নভেম্বরের মিয়ানমারে কথিত নির্বাচনে জালিয়াতি নিয়ে সু চির সরকার এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে একটা টানাপোড়েন চলছিল। ওই নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয় সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি)। সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) সংসদের অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সেনা অভ্যুত্থান ঘটে।
সোমবার ভোরে সূর্য ওঠার আগেই সু চি ও তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির নেতাকর্মীদের আটক করে মিয়ানমারের প্রভাবশালী সামরিক বাহিনী।
এরই মধ্যে সু চির সরকারের ২৪ জন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীকে বরখাস্ত করে সেনাসদস্যদের দিয়ে নতুন করে কেবিনেট গঠন করেছে সেনা কর্তৃপক্ষ। ঘটনার শুরু থেকেই সু চির অবস্থান নিয়ে তাঁর দলের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছিল।
সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নেওয়ার প্রতিবাদে দেশটির চিকিৎসকেরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে সেবা বন্ধ করে দিয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের অন্তত ৩০টি শহরের ৭০টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এই কর্মবিরতিতে সামিল হয়েছেন। আজ বুধবার থেকে তাঁরা সামরিক শাসনের অধীনে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও তরুণেরাও এই প্রতিবাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছেন। তাঁরা এনএলডি নেত্রী ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অং সান সু চির মুক্তিরও দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে সেনাশাসনের প্রতিবাদে চিকিৎসকেরা কালো ব্যাজ ধারণ করেছেন। গতকাল রাতে ইয়াঙ্গুনের বাসিন্দারা রাস্থায় নেমে থালা-বাটি বাজিয়ে সেনাশাসনের বিরোধিতা করেছে।
এনএলডির বরাত দিয়ে বুধবার বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সু চিকে তাঁর নিজের কম্পাউন্ডে হাঁটাচলা করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া দলের আরো কিছু নেতাকে আটকাবস্থা থেকে মুক্তি দিয়ে নিজেদের বাসায় পাঠানো হয়েছে। তবে তাদের গৃহবন্দি করেই রাখা হয়েছে। ফলে এনএলডির নেতারা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।