রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন
প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি ২০২১, ৫:৪৫ অপরাহ্ণ
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে ইভিএমের ‘প্রিন্টেড’ ফলাফল দিতে না পারলে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। এছাড়া ঘণ্টায় ঘণ্টায় ভোটের হিসেব না দেওয়া এবং নিজের ৪ থেকে ৫ শতাংশ ভোট কেড়ে নেওয়ায় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আরও ২টি মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন।
আজ (৩১ জানুয়ারি) রোববার নগরীর নাসিমন ভবন বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
ডা. শাহাদাতের অভিযোগ, ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ভোট কারচুপি করেছে। নির্বাচনে সাড়ে ৭ শতাংশ ভোট পড়লেও নির্বাচন কমিশন কারচুপি করে সাড়ে ২২ শতাংশ দেখিয়েছে।
তিনি বলেন, ইভিএমে ভোটের ফলাফল দেওয়ার কথা প্রিন্টেড কাগজে। কিন্তু তা না দিয়ে হাতে লেখা কাগজে দিয়েছে। ২৭ জানুয়ারির নির্বাচনে শুধু মাত্র ৩ নম্বর পাঁচলাইশ ওয়ার্ডের ৪টি ভোট কেন্দ্রের ফলাফল প্রিন্টেড কপি দেওয়া হয়েছে। বাকি ৭২৯ টি কেন্দ্রের ফলাফল দেওয়া হয়েছে লিখিত আকারে। নির্বাচন কমিশন ২৭ তারিখের সেই প্রিন্টেড কাগজ দিতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবো।
ডা. শাহাদাত জানান, ইভিএম মেশিনের প্রিন্টেড ফলাফলের জন্য নির্বাচন কমিশনকে তিন থেকে সাত দিন সময় দেবো। এরমধ্যে যদি ইভিএম মেশিনের প্রিন্টেড ফলাফল দিতে না পারে তাহলে মামলা করবো।
তিনি বলেন, ভোটের দিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৬০টি কেন্দ্রে ঘুরেছি। সব কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলর প্রার্থীদের কেন্দ্রে আসতে দেয়নি। নির্বাচনের আগে থেকে তাদের এলাকা ছেড়ে যাওয়ার হুমকি দেয় পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ফলাফল আমরা লিখি নাই। প্রিজাইডিং অফিসাররা লিখেছে। আর ইভিএম মেশিন থেকে ফলাফল বের করে ম্যানুয়ালি হাতে লেখার নিয়ম। কেননা থার্মাল পেপার থেকে লেখা দুই-চার দিন পরে উঠে যায়। তাই প্রিন্টেড কপি না দিয়ে হাতে লেখা ম্যানুয়ালি ফলাফল আমরা সরবরাহ করেছি। কারণ ম্যানুয়ালি ফলাফলের কপি অক্ষত থাকে। এটা আমরা দীর্ঘ দিন সংরক্ষণ রাখতে পারি।
ডা. শাহাদাতের মামলা করার ঘোষণার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যেটা নিয়মে আছে সেটা করেছি। এখন উনি (শাহাদাত) যেটা ভালো মনে করবেন সেটা করবেন।
সংঘর্ষ-সহিংসতা আর দুজনের প্রাণহানির মধ্য দিয়ে গত ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। প্রায় তিন লাখ ভোটের ব্যবধানে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী।
এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। ভোট দিয়েছেন মোট ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৫৪৩। ভোটের হার ২২ দশমিক ৫২ শতাংশ। ১ হাজার ৫৩টি ভোট বাতিল হয়েছে।
এর মধ্যে নৌকার প্রার্থী রেজাউল পেয়েছেন ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামিম, নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান প্রমুখ।