রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৬ জানুয়ারি, ২০২১ ৯:১৩ : পূর্বাহ্ণ
দ্বিতীয় ধাপের ৬০ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ চলছে। আজ (১৬ জানুয়ারি) শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে।২৯টিতে ইভিএম এবং ৩১টিতে কাগজের ব্যালটে ভোট নেওয়া হচ্ছে।
৬০টি পৌরসভার ৫৬টিতে মেয়র পদে ভোট হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের তারাব, সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, পাবনার ভাঙ্গুরা ও পিরোজপুর- এ চারটিতে ভোটের আগেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মেয়র পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছেন। তবে ৬০টি পৌরসভার সবকটিতেই কাউন্সিলর পদে ভোটগ্রহণ হচ্ছে।
৬০টি পৌরসভায় সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২ হাজার ৩২০ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছন। সংরক্ষিত আসনে কাউন্সিলর প্রার্থী ৭৪৫ জন।
দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ ৯ দলের মেয়র প্রার্থী। পাশাপাশি মেয়র পদে লড়ছেন বেশকিছু স্বতন্ত্র প্রার্থীও। তবে বরাবরের মতই ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মূলত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা আর বিএনপির প্রতীক ধানের শীষের প্রার্থীদের মধ্যে।
ভোট নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি উৎকণ্ঠা রয়েছে প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে। বিভিন্ন পৌরসভায় সংঘাত-সহিংসতা ও খুনোখুনির ঘটনাও ঘটছে। দিন দিন নির্বাচনী পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এর মধ্যে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় এক কাউন্সিলর প্রার্থীর ভাই খুনের মাত্র ৫ ঘণ্টা পর প্রতিপক্ষ প্রার্থী আলমগীর খান ওরফে বাবুর লাশ কুমার নদ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় শৈলকুপা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে ভোট স্থগিত ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভায় বোমা হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় ১৭টি পৌরসভায় অধিক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পৌরসভাগুলো হচ্ছে—দিনাজপুর, মোহনগঞ্জ, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, কিশোরগঞ্জ, কুলিয়ারচর, সাভার, বসুরহাট, গুরুদাসপুর, খাগড়াছড়ি, মোংলাপোর্ট, মুক্তগাছা, ফুলবাড়িয়া, ছাতক, শেরপুর, সারিয়াকান্দি ও সান্তাহার। প্রতিটি পৌরসভায় সাধারণ ভোটকেন্দ্রে পুলিশ ও আনসারের ১১ জন সদস্য ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৩ জন সদস্য মোতায়েন থাকবেন। বগুড়ার তিনটি পৌরসভায় এ সংখ্যার অতিরিক্ত হিসেবে দুই জন করে বাড়তি পুলিশ দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘আমরা সতর্ক। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে যা যা করার সবই করবে ইসি। নির্বাচনের আগে কোথাও কোথাও সংঘর্ষসহ হতাহত ও নিহতের ঘটনা ঘটেছে। সেসব বিষয় মাথায় রেখে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনসহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ম্যাজিস্ট্রেট, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ও আনসার, মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রয়োজনে আরো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা আশা করছি।’
দ্বিতীয় ধাপে ৬১টি পৌরসভায় ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভার একজন প্রার্থী মৃত্যুবরণ করায় ভোট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
যে ৬০ পৌরসভায় আজ ভোট:
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ; নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ ও কেন্দুয়া; কুষ্টিয়ার সদর, মিরপুর, ভেড়ামারা, কুমারখালী; মৌলভীবাজারের কুলাউড়া; নারাণগঞ্জের তারাব; শরীয়তপুর সদর; কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী; গাইবান্ধা সদর ও সুন্দরগঞ্জ; দিনাজপুর সদর, বিরামরপুর ও বীরগঞ্জ; মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ; মাগুরা সদর; ঢাকার সাভার; নওগাঁর নজিপুর; পাবনার ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, সাঁথিয়া, সুজানগর ও ঈশ্বরদী; রাজশাহীর কাকনহাট, ভাবনীগঞ্জ ও আড়ানী; সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক ও জগন্নাথপুর; হবিগঞ্জের মাধবপুর ও নবীগঞ্জ।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী; ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ও মুক্তাগাছা; নাটোরের নলডাঙ্গা, গোপালপুর ও গুরুদাসপুর; বগুড়ার শেরপুর, সারিয়াকান্দি ও শান্তাহার; সিরাজগঞ্জ সদর, উল্লাপাড়া, বেলকুচি, রায়পুর ও কাজিপুর; পিরোজপুর সদর; মেহেরপুরের গাংনী; ঝিনাইদহের শৈলকুপা; খাগড়াছড়ি সদর; বান্দরবানের লামা; টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী; কুমিল্লার চান্দিনা; ফেনীর দাগনভূঞা; কিশোরগঞ্জ সদর ও কুলিয়াচর; নরসিংদীর মনোহরদী; নোয়াখালীর বসুরহাট এবং বাগেরহাটের মোংলাপোর্ট।