রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৬ জানুয়ারি, ২০২১ ৭:০৮ : অপরাহ্ণ
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় অসম্ভব সাহসী দেশপ্রেমিক যুবকদের দেখা পেয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখন আর সেই ধরনের তরুণদেরকে দেখতে পাই না। ধীরে ধীরে আমরা মৃতপ্রায় জাতিতে পরিণত হতে চলেছি। কেন এমন হলো? এটি হয়েছে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর কল্যাণে। রাজনীতিতে এখন চলছে ব্যাপক দুর্বৃত্তায়ন।
আজ শনিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানী ধানমন্ডিতে একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের উদ্যোগে আয়োজিত দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ দোয়া মাহফিলে ৫০ জন সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, অন্তত ২৫টি রাজনৈতিক দলের নেতা ও চারজন সাবেক সচিবসহ অন্তত ২০ জন আমলা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারও ছিলেন।
মেজর হাফিজউদ্দিন বলেন, ব্যালট বক্স যে হাইজ্যাক করা যায়, ভোটের রায় যে হাইজ্যাক করা যায় তা এই স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা দেখলাম, ’৭২ এ প্রথম ডাকসু নির্বাচনে, ’৭৩ এ নির্বাচনে। গত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটও দিতে পারিনি। বাসা থেকে বের হতে পারিনি। ঘিরে রেখেছিল পুলিশ বাহিনী- আওয়ামী লীগের মাস্তান বাহিনী। এই যে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন হলো এবং এখন আমরা ধীরে ধীরে অন্ধকারের সুরঙ্গ পথে এগিয়ে চলেছি।
তবে কি এভাইে চলবে? এমন প্রশ্ন রেখে হাফিজউদ্দিন বলেন, আজকে গণতন্ত্র দেশ থেবে বিলীন হয়ে গেছে। আইনের শাসন নেই, সুশাসন নির্বাসনে। আমরা একটি পুলিশি রাষ্ট্রের নাগরিক হয়ে বসে আছি। যেখানে আমাদের কোনো অধিকার নেই।
এ অবস্থা থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আশা করব, ’৭১ এ যে ধরনের তরুণদেরকে দেখতে পেয়েছিলাম, সেই ধরনের সাহসী সন্তানদের আবার রাজপথে দেখতে চাই। আসুন, আমরা সবাই মিলে রাজপথে সামিল হয়ে এই দুঃশাসনের অবসান করি। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের অবসান চাই। এটা কেউ আমাদেরকে দেবে না। উত্তর দিক বা দক্ষিণ দিক থেকে কেউই না। এটা একমাত্র রাজপথে নেমে আদায় করতে হবে।
দোয়া মাহফিলে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ১৩টি বছর আমরা সংগ্রাম করে টিকেছিলাম ২০২১ সালের জন্য। এই বছর আমরা ঘুরে দাঁড়াতে চাই। আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই, তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার- এই তিনটি যদি বাস্তবায়িত হয়। তাহলে এই দেশ সোনার বাংলা হবে। আমরা তার জন্য চেষ্টা করতে চাই।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) ফখরুল আজম।
আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. এহসানুল হক মিলন, সাবেক মন্ত্রী আলমগীর কবির, স্বনির্ভরবিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক এমপি নিলোফার চৌধুরী মনি, মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর, সাবেক রাষ্ট্রদূত আসাফউদ্দৌলা, মেজর (অব.) সারোয়ার, রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মুস্তাফিজুর রহমান, মেজর জেনারেল (অব.) এহতাশামুল, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান নাসিম, লে. কর্নেল (অব.) হান্নান মৃধা, লে. কর্নেল (অব.) ডা. আকরাম, লে. কর্নেল (অব.) জয়নুল আবেদীন, লে. কর্নেল (অব.) ফেরদৌস আজিজ, লে. কর্নেল (অব.) রাশিদ উন নবী, মেজর (অব.) আতিক, মেজর (অব.) ইমরান, মেজর (অব.) হানিফ, হেফাজত ইসলামীর সাংগঠনিক সম্পাদক জাকারিয়া নোমানসহ ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।