বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৪ | ২২ কার্তিক, ১৪৩১ | ৪ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা দেশজুড়ে

সাকরাইন উৎসবে বদলে গেল পুরান ঢাকার আকাশের রঙ!


প্রকাশের সময় :১৪ জানুয়ারি, ২০২১ ১০:০৫ : পূর্বাহ্ণ
রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন

প্রতি বছরের মতো এবারও পুরান ঢাকায় ঐতিহ্যবাহী ‘সাকরাইন ঘুড়ি উৎসব’ উদযাপিত হয়েছে। ‘এসো ওড়াই ঘুড়ি, ঐতিহ্য লালন করি’- শ্লোগানে আয়োজিত এই উৎসব ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডে একযোগে আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শত শত রং-বেরঙের ঘুড়ি আকাশে শোভা পায়।

এ উৎসবকে কেউ কেউ বলে পৌষ সংক্রান্তি, কেউবা বলে সাকরাইন উৎসব। এই উৎসবে এবার নতুন মাত্রা যোগ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি এই উৎসবের উদ্বোধন করেন।

আয়োজন অনুযায়ী, ঘুড়ি উড়ানোর মতো মানুষ কমই চোখে পড়েছে। প্রত্যেকেই অপেক্ষা করছিলেন, সন্ধ্যার আতশবাজি ও আগুন খেলার জন্য। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে আতশবাজিতে মেতে উঠেন পুরান ঢাকার বাসিন্দারা। রঙিন সব আলোর ঝলকানিতে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে পুরান ঢাকা।

পুরান ঢাকায় বাসায় বাসায় দাওয়াত থাকে থাকে সব আত্মীয়-বন্ধুরা। প্রতি বছর অলিখিত নিয়মানুসারে দিবসটি পালিত হয়। আড্ডার পাশাপাশি ছেলেমেয়েরা মহা উৎসাহে ঘুড়ি ওড়ায়।

সাকরাইনে বাড়িতে থাকে মজার সব খাবারের আয়োজন। পিঠাপুলি, মুড়ি-গুড়, পায়েশ পরিবেশন চলে। মূলত ঘুড়ি উৎসব এটি। আগে সারাদিন ঘুড়ি উড়িয়ে সন্ধ্যায় ঘুড়ি-নাটাই ফেলে নতুন মাস শুরু করতো সবাই। ঘুড়ি, ফানুস, মশালসহ নানা আয়োজন থাকে এই উৎসবে। কেউ কেউ ছাদে মেজবানের ব্যবস্থা করে।

আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেলে পুরান ঢাকার ধূপখোলা মাঠে সাকরাইন উৎসব উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ঘুড়ি ওড়ান তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। পুরান ঢাকার ধূপখোলা মাঠে সাকরাইন উৎসব উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি ঘুড়ি ওড়ান।

অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সাকরাইন উৎসব শুধু পুরান ঢাকার উৎসব নয়, বাংলাদেশের উৎসব। এটি পুরান ঢাকার ঐতিহ্য তো বটেই, পাশাপাশি আমাদের আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশ। আগে শিশু-কিশোরেরা প্রায় সবাই ছোটবেলায় ঘুড়ি উড়িয়েছে। এখন যদিওবা শহরে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ নেই; বড় শহরগুলোয় অন্তত কমে গেছে। ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বড় শহরগুলোয় এখন আর খেলার মাঠগুলো নেই। ছাদের ওপরে গিয়ে যে ঘুড়ি ওড়াব, সেই সুযোগটা অনেক সংকুচিত হয়ে গেছে। যে কারণে আমাদের তরুণেরা–কিশোরেরা আর ঘুড়ি ওড়াতে পারে না।’

নগরীর ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে সাকরাইন/ ঘুড়ি উৎসব-১৪২৭ এর উদ্বোধন করতে গিয়ে ঘুড়ি ওড়ান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসও। তিনি বলেন, ঢাকাবাসীর ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন উৎসবের মাধ্যমে ঢাকার পুরো আকাশকে আমরা করে দিয়েছে রঙিন। এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা বিশ্ববাসীকে জানাতে চাই – আমরা আনন্দ করতে জানি, উৎসব করতে জানি, আমাদের ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করতে জানি। আজ ঢাকা শহরের প্রতিটি ভবনের ছাদে – মাঠে আমাদের ছেলেমেয়েরা উৎসব করছে এবং এই উৎসবে অংশগ্রহণ করছে।

ছোটবেলায় ঘুড়ি উড়াতেন বলে জানিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস ৩০ বছর পরে ঘুড়ি উড়াচ্ছেন বলে জানান।

এ সময় তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, করোনা মহামারীর মাঝে পুরো পৃথিবী থমকে গেছে। উৎসবের আনন্দে বাংলাদেশ দ্রুতই করোনার প্রকোপ থেকে মুক্তি পাক, মুক্তি পাক সারা পৃথিবীর মানুষ।

মন্তব্য করুন


আরও খবর