ইন্দোনেশিয়ার ৬২ জন যাত্রীসহ একটি বোয়িং ৭৩৭ বিমান যেখানে বিধ্বস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেই দুর্ঘটনাস্থলের সন্ধান পাওয়া গেছে। রোববার (১০ জানুয়ারি) জাভা সাগর থেকে শ্রীবিজয়া এয়ারের বেশকিছু ধ্বংসাবশেষ ও কারো শরীরের টুকরো উদ্ধার করা হয়েছে। দেশটির নৌবাহিনী এই তথ্য জানিয়েছে।
জাকার্তা পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, রাজধানী জাকার্তার কাছাকাছি জাভা সাগর থেকে দেহাংশ, পোশাকের টুকরা এবং ধাতব বস্তু পাওয়া গেছে।
শনিবার (৯ জানুয়ারি) ১০ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে যাত্রীবাহী বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার কিছুক্ষণ পরই জাভা সাগরে আছড়ে পড়ে।
দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই বিমানের ৬২ জন যাত্রীর সবাই ইন্দোনেশিয়ান। এরমধ্যে ১০ জন শিশু রয়েছে।
সাগরে বিমানের সন্ধান ও নিখোঁজ উদ্ধারে চলছে তৎপরতা। রাতভর অভিযানের ফলে বিমানটি যে জায়গা ধ্বংস হয় ওই এলাকা শনাক্ত করা গেছে। তারপরও উদ্ধারকারীদের চোখে ঘুম নেই। হেলিকপ্টার-জাহাজ নিয়ে নিখোঁজদের উদ্ধারে আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ার পরিবহনমন্ত্রী বুদি ক্যারিয়া সুমাদি গণমাধ্যমে জানান, ‘যে জায়গায় ধ্বংস হয়েছিল, সম্ভাব্য অবস্থান শনাক্ত করা গেছে। সেখান থেকে বস্তা পাওয়া গেছে। একটি কাপড় অন্যটিতে কারও দেহের টুকরো। এই জিনিসগুলো নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।’
মেট্রো টিভিকে জাকার্তা পুলিশের মুখপাত্র ইউস্রি ইউনুস বলেন, সকালে আমরা দুইটি ব্যাগ পেয়েছি। এরমধ্যে একটিতে যাত্রীর জিনিসপত্র এবং অন্যটিতে দেহাংশ।
ইমান যাই নামে একজন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বিমানে আমার পরিবারের চার সদস্য রয়েছে। আমার স্ত্রী এবং তিন সন্তান।
বিমান দুর্ঘটনায় দেশজুড়ে শোকের ছায়া। জীবিত না হোক অত্যন্ত প্রিয়জনের মরদেহ চান স্বজনরা। এ বিষয়ে ইন্দোনেশিয়ার সামরিক প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাদি তজাহানতো মৃতদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
স্থানীয় জেলে সোলহিন মার্কিন সংবাদমাধ্যম এপিকে জানান, নিয়ন্ত্রণ হারানো বিমান জাভা সাগরে আছড়ে পড়লে ওই এলাকাজুড়ে বিকট শব্দ হয়। তার দেখা মতে, তখন প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। আবহাওয়া খারাপের দিকে যাচ্ছিল। কিছুই পরিষ্কার দেখা যাচ্ছিল না। হঠাৎ বিকট শব্দ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢেউ এসে আমার নৌকায় আঘাত হানে। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখি জ্বালানি তেল এবং বিমানের কিছু ধ্বংসাবশেষ নৌকার চারপাশে।