রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৮ জানুয়ারি, ২০২১ ৩:১১ : অপরাহ্ণ
একদিন আগেও যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ছিল মানুষের শোরগোল আর আনাগোনা। আর এখন শুধুই নীরবতা। অনিশ্চয়তার মেঘে ঢাকা যুক্তরাষ্ট্রের আকাশ। মার্কিন কংগ্রেসের আইনসভা বা ক্যাপিটল হিলে নারকীয় তাণ্ডবের ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা নেমে এসেছে।
এমন বাস্তবতায় মেয়াদ শেষের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউস থেকে বিতাড়নের দাবি জোরালো হচ্ছে। সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগ করে ট্রাম্পকে ক্ষমতাচ্যুতে অভিশংসনের দাবি তুলেছে ডেমোক্রেটরা। ট্রাম্পকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি রিপাবলিকানদের মধ্যেও বাড়ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম।
মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) মার্কিন ক্যাপিটলে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিশংসনের আহ্বান জানিয়েছেন। ট্রম্পকে ক্ষমতাচ্যুতে সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী চালু করে সংবিধানের এই প্রক্রিয়ার জন্য ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রশাসনের আরও কমপক্ষে আটজনকে এগিয়ে আসতে হবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত বুধবারের সহিংস হামলাকে মার্কিন গণতন্ত্রের ‘চূড়ান্ত অবমাননা’ হিসেবে উল্লেখ করে ট্রাম্পের উস্কানিতেই এই হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে ডেমোক্রেটিক পার্টি।
সিএনএন জানিয়েছে, ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের বেশ কয়েকজন নেতা ও মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, তারা মনে করেন আগামী ২০ জানুয়ারির আগেই ট্রাম্পকে ক্ষমতাচ্যুত করা উচিত।
গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের জয় চূড়ান্ত করে মার্কিন কংগ্রেস। এর আগের দিন কংগ্রেসে বাইডেনের ইলেক্টোরাল কলেজ জয়ের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি অনুষ্ঠান শুরুর সময় ট্রাম্পের একদল সমর্থক ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালায়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, হামলায় চার জন নিহত ও অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছেন। ওই ঘটনায় অন্তত ৫২ জনকে আটক করা হয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কংগ্রেসের বৈঠকে ২৫তম সংশোধনী নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ওই সংশোধনী অনুযায়ী কোনো প্রেসিডেন্ট ‘দায়িত্ব পালনে অক্ষম’ হলে মেয়াদ শেষের আগেই তাকে সরিয়ে দেওয়া যায়। এ জন্য ভাইস প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে ভোটাভুটির প্রয়োজন রয়েছে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের কাছে চিঠি পাঠিয়ে ডেমোক্র্যাট সিনেটররা ট্রাম্পকে সরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। চিঠিতে তারা লিখেছেন, হামলা চালিয়ে মার্কিন ‘গণতন্ত্রের অবমাননা’ করেছেন ট্রাম্প।
তবে পেন্সের এক উপদেষ্টার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউস থেকে সরিয়ে দিতে ২৫তম সংশোধনী ব্যবহারের বিরোধিতা করেছেন তিনি।
এদিকে, পেন্স যদি উদ্যোগ না নেন তবে বুধবারের সহিংসতায় ভূমিকা রাখার জন্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন কার্যক্রম শুরু করতে পার্লামেন্ট অধিবেশনের ডাক দেওয়া হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি।
‘বিদ্রোহ উস্কে দেওয়ার’ অভিযোগে সংবিধান মোতাবেক ট্রাম্পকে অপসারণের আহ্বান জানিয়েছেন হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ও সিনেটে ডেমোক্র্যাটিক দলের নেতা চাক শুমার।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কংগ্রেসের বৈঠকে ২৫তম সংশোধনী নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ওই সংশোধনী অনুযায়ী কোনো প্রেসিডেন্ট ‘দায়িত্ব পালনে অক্ষম’ হলে মেয়াদ শেষের আগেই তাকে সরিয়ে দেওয়া যায়। এ জন্য ভাইস প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে ভোটাভুটির প্রয়োজন রয়েছে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের কাছে চিঠি পাঠিয়ে ডেমোক্র্যাট সিনেটররা ট্রাম্পকে সরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। চিঠিতে তারা লিখেছেন, হামলা চালিয়ে মার্কিন ‘গণতন্ত্রের অবমাননা’ করেছেন ট্রাম্প।
তবে, ট্রাম্পের মেয়াদ দুই সপ্তাহেরও কম থাকায় হাউসে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু ও শেষ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় থাকবে কি না তা নিশ্চিত নয়।
গতকাল ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, কয়েকজন রিপাবলিকান নেতাও ট্রাম্পকে সরিয়ে দেওয়ার পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন।
আগামী ২০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেবেন নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।
গতকাল কংগ্রেসে বাইডেনের বিজয় ঘোষণার পর ট্রাম্প ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলেছেন।
এক বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘আমি যদিও নির্বাচনের ফলাফলের সঙ্গে একমত নই… তবুও আগামী ২০ জানুয়ারি নিয়ম অনুযায়ী ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। আমি সব সময়ই বৈধ ভোটগুলো গণনা নিশ্চিত করার কথা বলেছি।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘আমেরিকাকে মহান হিসেবে গড়ে তোলার লড়াইয়ের এটি শুরু মাত্র।’
ট্রাম্প বুধবারের সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘হামলাকারীরা আমেরিকান গণতন্ত্রের পবিত্রতা নষ্ট করেছে এবং এর জন্য অবশ্যই তাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে।’
যদিও এর মাত্র একদিন আগে এক ভিডিওবার্তায় তিনি সমর্থকদের বাড়ি ফিরে যেতে অনুরোধ করে বলেছিলেন, ‘আমরা আপনাদের ভালোবাসি। আপনারা খুব স্পেশাল।’