রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২ জানুয়ারি, ২০২১ ৮:২৪ : অপরাহ্ণ
শীত মৌসুমে এমনিতেই সিলেটের যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের দেশে ফেরার হার বাড়ে। এবার শীতে যুক্তরাজ্যে নতুন ধরণের করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় ভয়ে আরও অধিকসংখ্যক যাত্রী দেশে ফিরে আসছিলেন। তবে বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাজ্য থেকে ফেরা যাত্রীদের নিজ খরচে বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিতক কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়ায় সিলেটের যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনেকেই দেশে ফেরার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন বলে জানা গেছে।
ওসমানী বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহের প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জতিক বিমানবন্দরে বিমানের ফ্লাইট আসে। সর্বশেষ গত ২৪ ডিসেম্বর ২০২ জন, ২৮ ডিসেম্বর ২০২ জন এবং ৩১ ডিসেম্বর ২৩৭ যাত্রী নিয়ে বিমানের ৩টি ফ্লাইট ওসমানীতে আসে। এই তিনদিন আসা যাত্রীদের মধ্যে যথাক্রমে ১৬৫, ১৪৪ ও ২০২ জন ছিলেন সিলেটের যাত্রী।
সবমিলিয়ে গত ডিসেম্বরে লন্ডন থেকে আটটি ফ্লাইটে এক হাজার ২২৬ যাত্রী সিলেট এসেছেন।
তবে নিজ খরচে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার সরকারি নির্দেশনার পর দেশে ফিরতে প্রবাসীরা আগ্রহ হারাচ্ছেন বলে সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। সরকারি এই নির্দেশনা ১ জানুয়ারি থরকে কার্যকর হয়েছে। এরপর আগামী সোমবার (৪ জানুয়ারি) লন্ডন থেকে বিমানের প্রথম ফ্লাইট সিলেটে আসবে। তবে এই ফ্লাইটে যাত্রী সংখ্যা অনেক কমে গেছে।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের মধ্যে বেশিরভাগই সিলেটের বাসিন্দা।
সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারি কমিশনার (কোভিড-১৯ ও মিডিয়া সেল) শাম্মা লাবিবা অর্ণব বলেন, নিজ খরচে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনার পর যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনেকেই দেশে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। আগামী সোমবারের ফ্লাইটে সিলেটের ৬৯ জন যাত্রী রয়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। পরবর্তী ফ্লাইটগুলো যাত্রী আরও কমতে পারে।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের (স্ট্রেইন) সংক্রমণের কারণে যুক্তরাজ্যের সাথে বিমান যোগাযোগ নিয়ে ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের সাথে বিমান যোগাযোগ বন্ধেরও দাবি উঠেছে। তবে ঝুঁকি কমাতে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে আসা যাত্রীদের নিজ খরচে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। গত ২৮ ডিসেম্বর মন্ত্রীপরিষদের বৈঠকে এই নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য সিলেটে হোটেল স্টার স্পেসিফিক ও হোটেল হলি গেইটকে চুড়ান্ত করা হয়েছে। যাত্রী সংখ্যা বাড়লে হোটেলের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলে জানান শাম্মা লাবিবা অর্ণব।
বিমানবন্দর থেকে বিটিআরসির বাসে করে যাত্রীদের হোটেল নিয়ে আসা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যাত্রীরা যাতে হোটেলের বাইরে না আসেন এবং হোটেলে যাতে তাদের স্বজনরা প্রবেশ না করেন তা তদারকি করতে হোটেলগুলোর সামনে সার্বক্ষণিক পুলিশ থাকবে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে সিলেট আসা যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রেন্টিনের জন্য আমরা হোটেল স্টার স্পেসিফিক ও হোটেল হলি গেইট চুড়ান্ত করেছি। এছাড়া আমরা কয়েকটি হোটেল চুড়ান্ত করবো। যুক্তরাজ্য থেকে আসা প্রবাসীদের এসব হোটেলে নিজ খরচে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
জানা যায়, যাত্রীদের কোয়ারেন্টিনে রাখার বিষয়ে গত ২৯ ডিসেম্বর সিলেটের বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে একটি সভা হয়। সভায় সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন বিআরডিটিআই ক্যাম্প এবং যাত্রীদের আর্থিক অবস্থা অনুযায়ী বিভিন্ন হোটেলে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখার সিদ্ধান্ত হয়। যারা কোয়ারেন্টিনের খরচ দিতে পারবেন না তারা থাকবেন সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকা সিলেটের শাহপরাণ এলাকার বিআরডিটিআই ক্যাম্পে।