রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৪ ডিসেম্বর, ২০২০ ৬:৪৩ : অপরাহ্ণ
রাষ্ট্রপতি বরাবর ৪২ বিশিষ্ট নাগরিক নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও আর্থিক অনিয়মের যে অভিযোগ করেছেন, তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্য কমিশনাররা।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সিইসি কে এম নূরুল হুদা কমিশনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে ৪২ নাগরিকের বিভিন্ন অভিযোগের বিপক্ষে তাদের অবস্থান তুলে ধরেন। এ সময় নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, শাহাদাত হোসাইন, কমিশন সচিব মোহাম্মদ আলমগীর উপস্থিত ছিলেন। তবে সংবাদ সম্মেলনে অপর নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার উপস্থিত ছিলেন না।
গত ১৪ ডিসেম্বর চিঠি দিয়ে ইসির বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের দাবি জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দেন দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক। এ বিষয়ে সরাসরি কথা বলার জন্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়ে অনুরোধও জানিয়েছেন।
যদিও গত ২০ ডিসেম্বর সেই চিঠিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।
এর চারদিন পর সংবাদ সম্মেলন ডেকে ৪২ নাগরিকের তোলা অভিযোগের পাল্টা বক্তব্য দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। লিখিত বক্তব্যের বাইরে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি সিইসি নূরুল হুদা।
চিঠিতে উল্লেখ করা অভিযোগগুলোর বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন সিইসি।
কে এম নূরুল হুদা বলেন, প্রশিক্ষণ ব্যয়ে আর্থিক অনিয়মের ‘কোনো সুযোগ নেই’। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির যে অভিযোগ করা হয়েছে তা ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন’।
ইভিএম ক্রয় ও ব্যবহারে অসদাচরণ ও অনিয়মের অভিযোগের জবাবে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ইভিএম আমদানি করেনি। পিপিআর অনুসরণ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তা ক্রয় করা হয়েছে। ইভিএম কেনার কোনও বিল কমিশনের কাছে ন্যস্ত হয় না। এ বিল সরকারিভাবে সরাসরি সেনাকর্তৃপক্ষকে পরিশোধ করা হয়। এ কাজে নির্বাচন কমিশন কোনও আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে না। এখানে দুর্নীতির কোনও প্রশ্ন ওঠে না।’
নিয়মবহির্ভূতভাবে বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার করার অভিযোগ প্রসঙ্গে নূরুল হুদা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন তাদের প্রাধিকারভুক্ত একটি জিপ ও একটি কার এবং তার জন্য নির্ধারিত পরিমাণ জ্বালানি ব্যবহার করে। নতুন গাড়ি বিলাসবহুল তো নয়ই, অতি সাধারণ মানের। নির্বাচন কমিশন গাড়ি বিলাস করেনি, বরং তিন বছর ছয় মাস প্রাধিকারভুক্ত গাড়ি পায়নি। তারা প্রকল্প থেকে সচিবালয়ের জন্য দেওয়া গাড়ি শেয়ার করে ব্যবহার করেছেন মাত্র। কাজেই নিয়মবহির্ভূতভাবে তিনটি বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
সিইসি বলেন, জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে অসদাচরণের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তাও অসত্য। ২০১৮ সালের নির্বাচন বিদেশি কূটনীতিকরা পর্যবেক্ষণ করেছেন। নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ তোলেননি। গণমাধ্যমও কোনো অভিযোগ করেনি। বরং অনিয়মের কারণে বহু স্থানীয় নির্বাচন বাতিল করা হয়েছে।
নূরুল হুদা বলেন, তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতি পদে ২-৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোট পড়েছে ৬০ থেকে ৮০ ভাগ। নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা চলে গেছে এ খবর ভিত্তিহীন।